পারিবারিক কলহের জেরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ফসলি জমিতে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয় প্রতিপক্ষ। সেই পথ ধরে ফসল আনার সময় হামলার শিকার হন হাসিনা বেগম ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসিনাকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ঘটনাটি ঘটেছে সম্প্রতি উপজেলার সাহাবাজ ইউনিয়নের মধ্য সাহাবাজ গ্রামে। এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নজরুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলামের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। মূল রাস্তার পাশে নজরুলের জমি থাকলেও শহিদুলের বাড়ি ভেতরে। আগে উঠান দিয়ে নজরুলের পরিবার যাতায়াত করলেও দুই মাস আগে শহিদুল বাঁশের বেড়া দিয়ে সেই পথ বন্ধ করে দেন। শুধু পায়ে হাঁটার জন্য অল্প জায়গা ফাঁকা রাখলেও ফসল পরিবহনের রাস্তা একরকম বন্ধই হয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) বেলা ১২টার দিকে স্ত্রী হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ধান কাটতে যান নজরুল। এর আগেই ট্রলিতে ইট কিনে বাড়িতে ফিরছিলেন শহিদুল। পথে শহিদুলকে দেখে হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছেন, জমিতে যাব কীভাবে? পরে দুজনেই মাঠে যান ধান কাটতে।
পরে বিকালে ধান কেটে মাথায় আঁটি বহন করে বাড়ি ফিরছিলেন হাসিনা বেগম। শহিদুলের উঠান পার হওয়ার সময় পেছন থেকে শহিদুলের ছেলে মোসাদ্দেক হোসেন রবিন লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
হাসিনাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে শহিদুল, তার দুই ভাই শাহজাহান ও সাজু, ছেলে রবিন এবং ভাতিজা রোকনের লাঠির আঘাতে আহত হন নজরুল ইসলাম, তার বৃদ্ধা মা নছিমন বেওয়া ও বোন নূর নাহার।
পরে স্থানীয়রা হাসিনা ও নজরুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। নজরুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসিনাকে রেফার করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নজরুল ইসলামের ফসলি জমিতে যাতায়াতের একমাত্র পথটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছিলেন শহিদুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ওই পথ দিয়ে কৃষিকাজে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছিল। তবে ঘটনার পরদিন স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত বেড়াটি সরিয়ে দেন শহিদুল ও তার পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, নজরুল ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা আমরা নিজের চোখেই দেখেছি।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এএম