রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার খাঁজা অফিস থেকে বেড়িবাঁধ ভায়া জিএন মডেল গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত মোট ৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে।
নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সড়কে ব্যবহার করা নিয়ে প্রতিবাদ করায় পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সীমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা যায়।
সম্প্রতি হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফেরদৌস আলম।
জানা যায়, গত ১০ মার্চ ২০২৪ অর্থ বছরে ৭ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে সড়ক তৈরি করার কাজ পায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্স লিমিটেড। যার কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১০ মার্চের মধ্যে। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হলেও শেষ হয়নি রাস্তার নির্মাণ কাজ। বর্তমানে কাজের মেয়াদ বর্ধিত করে চলতি বছরের আগামী (২২ মে) পর্যন্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সড়কের গোয়ালন্দ খাঁজা অফিস থেকে মাদরাসা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তার কাজ করা হয়েছে নিম্নমানের পাথর ও আদলা ইট দিয়ে। আর ঢালাইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে নামমাত্র সিমেন্ট, যার বেশিরভাগই বালু। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী পৌরসভাকে অবগত করলে, সুংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে পাথর ও আদলা ইট পরিবর্তন করার জন্য লিখিতভাবে চিঠি দেওয়া হয়।
এদিকে জানা যায়, রাস্তার কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা নিয়ে গোয়ালন্দ পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার নাসিরন আক্তার সীমার সঙ্গে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মতবিরোধ দেখা দেয়। তারই জের ধরে গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সীমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ঠিকাদারের নিয়োগপ্রাপ্ত সিনিয়র রাজমিস্ত্রি ইকবালের। এ সময় নাসরিন আক্তারের ওপর হামলা করে তার হাতের আঙুল ভেঙে দেন রাজমিস্ত্রি ইকবাল।
পরে নাসরিন আক্তার সীমা বাদী হয়ে ইকবালকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্স কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা নিয়ম মেনে কাজ করছে। তাদের কাজে কোনো ধরণের অনিয়ম নেই। আর ইঞ্জিনিয়ার নাসিরন আক্তার সীমার ওপর হামলার ঘটনাটি রাজমিস্ত্রি ইকবালের ব্যক্তিগত বিষয়। এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কোনো যোগসূত্রতা নেই।
তবে নিম্নমানের পাথর ও আদলা ইট দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফেরদৌস আলম খান। তিনি বলেন, প্রথম দিকে কিছু নিম্নমানের আদলা ইট ও পাথর এসেছিল। এজন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
সড়কের কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। পরে তিনি বলেন, কাজ চলছে। সঠিক কাজ সময়মতো বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
ইঞ্জিনিয়ার নাসিরন আক্তার সীমার ওপর হামলা হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসাক ও গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান বলেন, অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এআর