যশোরের কেশবপুরে মৎস্য ঘেরে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভূগর্ভের পাশাপাশি অনেকে নদ-নদী থেকে সেচ দিয়ে ঘেরে পানি নিচ্ছেন মাছের ঘের মালিকরা। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে এবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
তবে মৎস্য অফিস কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবদহ এলাকায় মৎস্য ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ না করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি ছোট-বড় ঘের রয়েছে। গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুরে বন্যা দেখা দেয়।
২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, ঘের মালিকরা ভূগর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপ নেবে। সরোজমিন উপজেলার পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাটি ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার ঘের মালিকরা আগে ভাগেই ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরে নিচ্ছেন।
এভাবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় পানি উত্তোলন করা হলে গত বারের মতো এবারও মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠবে। গত বছর বর্ষা মৌসুমে ঘের উপচে পানি মানুষের বাড়ি-ঘরে ওঠে। প্লাবিত হয় ১০৪টি গ্রাম। মাছের ঘেরসহ ফসলে প্রায় ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলা উদ্দিন আলা বলেন, গত বছর বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে তার ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম। এবার আগে ভাগেই ঘের মালিকদের বলা হয়েছে, মাছের ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ করে ঘের করার জন্য।
হরি-ঘ্যাংরাইল অববাহিকার জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কেশবপুরে অপরিকল্পিতভাবে ঘের তৈরি হওয়ায় বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে এলাকা জলবদ্ধতা হয়ে পড়ে। ঘের মালিকরা ভূগর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করলে গত বছরের মতো এবারও এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। গত বছর প্রায় ৬ মাস জলাবদ্ধতা ছিল।
২৭ বিল পানি নিষ্কাশন কমিটির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, পানি উত্তোলন বন্ধ করা না হলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সূদীপ বিশ্বাস বলেন, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি ছোট-বড় মাছের ঘের রয়েছে। এছাড়া পুকুর রয়েছে ৬ হাজার ৬৪০টি। ঘের মালিকদের ভবদহ এলাকায় ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ করে ঘের স্থাপন করতে বলা হয়েছে। ঘের মালিকরা সর্বোচ্চ দেড় ফুট পানি ঘেরের মধ্যে উত্তোলন করতে পারবে। এর থেকে অতিরিক্ত পানি কেউ উত্তোলন করলে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, ভূগর্ভ থেকে মাছের ঘের মালিকরা ঘেরে পানি উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এএস