বিয়ের প্রায় ৪ বছর পর রিকশাচালক জিয়ারুল ও গৃহিণী শামীমা দম্পতির কোল জুরে আসে ৩ যমজ সন্তান। ১ মেয়ে ২ ছেলে একসাথে একই দিনে জন্ম নেওয়ায় একদিকে মা বাবা ও পাড়াপ্রতিবেশি আর স্বজনরা খুশি হলেও চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গনশারটেকের ভাড়াটিয়া রিক্সা চালক জিয়ারুল ইসলাম(৩৩)। এতোদিন দিনভর রিক্সা চালিয়ে কিংবা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে দিনশেষে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনমতে চলতো দুজনের সংসার।
কিন্তু একসঙ্গে ৩ সন্তান হওয়ায় হঠাৎ আর্থিক টানাপোড়েনে চরম বিপাকে পড়েন জিয়ারুল। এতে তার কোলের শিশুদের দুধ কিনে খাওয়ানো, সিজারে বাচ্চা নেওয়ায় তার স্ত্রী শামীমার হাসপাতালের নানাবিধ খরচ জোগানো এমনকি জমজ শিশুদের বড় করতে, লেখাপড়াসহ নানা বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন পরিবারটি।
রিক্সা চালক জিয়ারুল নীলফামারী জেলা সদরের বাসিন্দা হলেও গত ১৩ বছর ধরে পূর্বাচলের আশপাশে আয় রোজগারের জন্যে কখনো রিক্সা চালক কখনো রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। গত ৪ বছর পূর্বে উত্তর ব্রাহ্মণখালীর এনামুলের মেয়ে শামীমাকে বিয়ে করেন তিনি। নিজের জমি ও ঘর না থাকায় গনশারটেকের ওহাব মিয়ার বাসায় ভাড়ায় থাকেন তিনি। তবে জমজ ৩ শিশু জন্ম নেওয়ার পর ওহাব মানবিকতা দেখিয়ে ভাড়ায় ছাড় দিয়েছেন আর সৌদি প্রবাসী জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় বাসিন্দারাও পাশে দাড়িয়েছেন পরিবারটির। তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয় ভেবে সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন দরিদ্র জিয়ারুল ও শামীমা দম্পতি।
এসব বিষয়ে কথা হয় জমজ ৩ সন্তানের মা গৃহিণী শামীমার সাথে। তিনি বলেন, এতোদিন কোনমতে রিক্সা চালনার আয় দিয়ে চলতে পারতাম। কিন্তু এখন আর পারছি না। তাই বিত্তবানসহ সরকারি সহায়তা পেলে সুস্থভাবে সন্তানদের বড় করতে পারতাম। এ সময় তার বিকাশ একাউন্ট যুক্ত মুঠোফোন নাম্বার ( ০১৭২৬-৮৫০৮৮৭) তে সহায়তা পাঠানোর আবেদন করেন অসহায় গৃহিণী শামীমা আক্তার।
জমজ ৩ সন্তানের বাবা জিয়ারুল ইসলাম বলেন, রিকশা চালাই, আবার রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। নিজের শ্রম দিয়ে যা আয় করি এ মুহুর্তে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমার দিকে মানবিক বিত্তবানরা নজর দিলে আমার জীবনটা সুন্দর হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওহাব মিয়া বলেন, জিয়ারুলের আয়ের তুলনায় এখন খরচ বেড়ে গেছে। তাই তার দিকে সবার নজর দেয়া প্রয়োজন। বাচ্ছাগুলো জন্ম হওয়ার পর কুর্মিটোলায় মা ও সন্তানদের পেছনে প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়। যার কিছু অংশ সৌদি প্রবাসি জসিম উদ্দিন ও প্রতিবেশীরা দিয়েছেন। তবে এ পরিবারটিকে সরকারি সহায়তা দিলে সন্তানদের সুস্থরূপে বড় করে তুলতে পারবেন।
এসব বিষয়ে কথা হলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানলাম। অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। তবে দরিদ্র এ পরিবার ও ৩ জমজ শিশুদের সরকারি সহায়তা প্রদান করবো। স্থায়ী সহায়তার ব্যবস্থা করবো।
কেকে/এআর