অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এ্যাব’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শামিম রাব্বি সঞ্চয় বলেন, সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের অতীতের সব মামলা প্রত্যাহার করলেও প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করে কারাগারে পাঠানো স্পষ্ট বৈষম্য। এসময় তিনি তুহিনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবে নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনের মুক্তির দাবিতে উত্তরাঞ্চল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী মন্নুর আহমেদের সঞ্চালনায় শুরু হওয়া এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব প্রদান করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মো. হারুনুর রশিদ।
হারুনুর রশিদ বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমলের মিথ্যা মামলায় এখনো কারাগারে থাকতে হবে— এটা মেনে নেওয়া হবে না। সব হয়ারানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে শাহরিন ইসলাম তুহিনকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তুহিন জিয়া পরিবারের হওয়ায় তার প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে, অবিচার করা হচ্ছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। এতে বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে শাহরিন ইসলাম তুহিনের সকল মামলা প্রত্যাহার করে তাকে ক্লিন শিট দিয়ে মুক্তি দিন। অন্যথায় আমরা ছাত্র জনতা বৃহত্তর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবো।
প্রকৌশলী শামিম রাব্বি সঞ্চয় বলেন, প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিন গত ২৯ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করলে শুনানি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার পৃথক দুই বিশেষ জজ আদালত। যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক আচরন। কারণ, এক-এগারো’র অবৈধ সরকারের দেওয়া একই ধরনের মামলায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে তাহেরকে ক্লিন শিট দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি আসন্ন সংসদ নির্বচনে অংশ নিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের অতীতের সমস্ত মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল। বর্তমান সরকার এটা স্বীকার করে নিয়ে সব মামলা প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক সহনশীলতা বা সমঝোতার বার্তা দিয়েছে। কিন্তু, একই ধরনের মামলা হওয়া সত্ত্বেও প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক সহনশীলতা বা সমঝোতার বার্তা দিচ্ছেন না। যা খুবই দুঃখজনক।
মুক্তি বিলম্বের জন্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদকে দায়ী করে তিনি বলেন, শাহরিন ইসলাম তুহিনের মামলার সমস্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়পত্র বা ক্লিয়ারেন্স দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠিয়েছেন মামলাগুলি প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রভাব খাটিয়ে মামলাগুলো প্রত্যাহারে বাধাগ্রস্ত ও বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। তাদেরকে এই কাজে সহায়তা করছেন, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া (সাথী) এবং প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না।
এছাড়া বক্তারা বলেন, তুহিনের প্রতি এই দৃশ্যমান ও ন্যাক্কারজনক বৈষম্যের কারণ, তিনি জিয়া পরিবারের সদস্য এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে। এতে বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। আমরা আজ উত্তরাঞ্চল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম আয়োজিত এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রকৌশলী সমাজের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই যে, অনতিবিলম্বে শাহরিন ইসলাম তুহিনের সকল মামলা প্রত্যাহারপূর্বক তাকে ক্লিন শিট দিয়ে মুক্তি দিন। অন্যথায় আমরা বৃহত্তর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবো। তুহিন তার নির্বাচনী আসনে খুবই জনপ্রিয় নেতা, নীলফামারীতে তার এলাকার মানুষ তাদের প্রিয় নেতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন উত্তরাঞ্চলে ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোর্তুজা, সহসভাপতি প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খান, প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা, প্রকৌশলী মো. ফজলা রহমান, প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনুল হক জেমস, আমিনুল ইসলাম রিমন, প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলী, প্রকৌশলী মনোতোষ কুমার পাল, প্রকৌশলী আতিকুর রহমান আতিক, প্রকৌশলী আলমগীর মিয়া, প্রকৌশলী মো. জামিল উদ্দিন, উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর আলী, এ্যাব’র সাবেক যুগ্ম সচিব ও রুয়েট ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জিয়া, রুয়েটের সাবেক ছাত্রদল নেতা প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক মুকতাদীর বিল্লাহ্, প্রকৌশলী এ এস এম কবির, প্রকৌশলী মো. ইফতেখার, প্রকৌশলী মো. রাজু প্রমুখ।
কেকে/এজে