মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় বাজারসংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে সেতু না থাকায় প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছেন মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর জেলার অন্তত দুই লাখ মানুষ।পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ট্রলার ব্যবহার করা হলেও এতে সময়, অর্থ ও নিরাপত্তার ঝুঁকি— সবই বেড়েছে কয়েকগুণ।
দিঘিরপাড় খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শত শত মানুষ নৌকা ও ট্রলারে পার হচ্ছেন। কেউ যাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ শহর কিংবা রাজধানী ঢাকায়, আবার কেউ ফিরছেন বাজার বা চিকিৎসা শেষে গ্রামে। আশপাশের অন্তত ১১টি ইউনিয়নের মানুষ এই খেয়াঘাটে নির্ভরশীল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিশেষ করে রাতে ট্রলার না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় যাতায়াত চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষজন প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, একটা সেতু হলে আমাদের যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে যেত। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক, ব্যবসায়ী— সবাই উপকৃত হতো।
শরীয়তপুরের চরআত্রা থেকে আসা কৃষক মোকবুল হোসেন বলেন, আমার উৎপাদিত সবজি ঢাকায় নিতে ট্রলারে সময় লাগে অনেক বেশি। রাস্তা থাকলে গাড়ি ভাড়া দিয়েই দ্রুত চলে যেতাম।
সেতু নির্মাণের দাবিতে স্থানীয়রা বহুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের মতে, একটি সেতু শুধু যোগাযোগের সুযোগ নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনবে, বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য, সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর) প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম খোলা কাগজকে বলেন, দিঘিরপাড় বাজারসংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে প্রায় ১২০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে নদীর পশ্চিমপাড়ে চার কিলোমিটার আরসিসি সড়ক নির্মাণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত আছে।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল মাটি পরীক্ষা ও সার্ভে সম্পন্ন করেছে। এখন প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন ও বরাদ্দ চাওয়া হবে।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, দ্রুত সেতু নির্মাণের মাধ্যমে অবসান ঘটবে বহু বছর ধরে চলা যাতায়াত ও জীবিকার দুর্ভোগের।
কেকে/এএম