প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরতে চাইলে রূপসী গোয়ালিয়ার বিকল্প নেই। সড়কের দুপাশে পাহাড়ের মনোরম পরিবেশ দেখে মন জুড়িয়ে যায়। এছাড়া একটু কষ্ট করে হেঁটে পাহাড়ের চূড়ায় বেয়ে উঠলে সমুদ্র দর্শন ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হয়। সুউচ্চ পাহাড় থেকে চারপাশে প্রকৃতির চোখজুড়ানো সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা।
ভ্রমণপিপাসুদের নজর কাড়ছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি পর্যটন স্পট রূপসী গোয়ালিয়া। পাহাড়-সমুদ্রের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে এখানে প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। সমুদ্রসৈকতের অতি কাছে হওয়াতে স্পটটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে অনেকের কাছে এটি রূপসী গোয়ালিয়া বা মিনি বান্দরবান নামেও বেশ পরিচিত।
স্থানটি কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের গোয়ালিয়া গ্রামে। শহরের কলাতলী মোড় থেকে ১৮ কিমি. দক্ষিণে এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজুখাল ব্রিজের পূর্ব পাশে এর অবস্থান। ঢাকা থেকে আসা পর্যটক শান্ত আলমগীর বলেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে পরিবারসহ ভ্রমণে এসেছি। সমুদ্রের কাছাকাছি নয়নাভিরাম পাহাড়ের সৌন্দর্য অবলোকন করা সৌভাগ্যের। উঁচু-নিচু পাহাড় আর এখানকার ছায়াশীতল ও প্রাকৃতিক পরিবেশ মুগ্ধ করেছে।
দল বেঁধে ঘুরতে আসা কলেজপড়ুয়া ছাত্র তামজিদ, আলিফ, জোহান, সাঈদ ও তুহিন বলেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে বান্দরবান অথবা সাজেক ভ্রমণে গেলে কয়েকদিন রাতযাপন করা লাগে। সেই সঙ্গে ব্যয়বহুল খরচ হয়। কিন্তু এখানে বিনা খরচে এসে তার চাইতে অধিক প্রশান্তি পায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হাশেম আলী জানান, আগের পেশা ছেড়ে বর্তমানে এখানে দোকান দিয়েছি। বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। দোকানের আয় থেকে আমাদের পরিবার সুন্দরভাবে চলতে পারছি। জানা যায়, স্থানীয়দের যাতায়াতের সুবিধার্থে একসময় পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে এই সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল। যেটি ধোয়াপালং এবং রাবেতা থেকে সরাসরি মেরিন ড্রাইভ সড়কে গিয়ে পৌঁছেছে। প্রকৃতির সৃষ্ট এই স্পটটিতে প্রশান্তি খুঁজতে আগে থেকে স্থানীয় পর্যটকরা মাঝেমধ্যে বিকালে এসে ভিড় জমাত। কখনো বনভোজনের আয়োজন করা হতো। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অল্পসময়ে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পরিচিতি লাভ করে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কক্সবাজার সভাপতি এইচ এম এরশাদ জানান, প্রকৃতি এই গোয়ালিয়াকে অপরূপভাবে সাজিয়েছে। পর্যটকের আগমনে দিনদিন স্থানটির পরিচিতি বাড়ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্পটটি সরকারিভাবে সঠিক পরিকল্পনা হাতে নিলে প্রাকৃতিক পরিবেশে কক্সবাজারের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। তবে কোনোভাবে প্রকৃতি ধ্বংস করা যাবে না।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রকৃতির সাজে সেজে আছে গোয়ালিয়া। প্রকৃতির মাঝে কৃত্রিমতা নিয়ে আসা ঠিক হবে না। এখন পর্যটক বেশ পছন্দ করছে। যদি প্রয়োজন হয় আরো কাজ করা হবে।
কেকে/এএস