শরীয়তপুরে মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখি করায় নাজমুল মাদবর (২৭) নামে এক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একটি সেলুনের মধ্যে তাকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়।
নাজমুল মাতবর শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড পালং গ্রামের আবুল কাশেম মাদবরের (ভেন্ডার) ছেলে। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী।
মাদক ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখি করায় এলাকার বখাটে মাদকসেবীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন নাজমুলের বাবা কাশেম ভেন্ডার। এ ঘটনায় আল আমিন বেপারী নামে এক মাদকসেবীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে মাদক সেবনের একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী নাজমুল মাদবর। এছাড়া তিনি মাদক কারবারি ও মাদসেবীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সোচ্চার ছিলেন। এ নিয়ে এলাকার মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের টার্গেটে ছিল নাজমুল।
শনিবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সাগর শীলের সেলুনের মধ্যে একা পেয়ে ৫/৭ জন মিলে নাজমুল মাদবরকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এই হামলার সঙ্গে একই এলাকার মনির মাদবরের ছেলে প্রিয় মাদবর, শাজাহান হাওলাদারের ছেলে নাসির হাওলাদার, নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে মনির শেখ, ধলু বেপারীর ছেলে আল আমিন বেপারী এবং পল্লব মাদবর জড়িত বলে দাবি করেছেন আহত নাজমুল মাদবর ও তার পরিবার। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নাজমুলের বাবা আবুল কাশেম মাদবর মোবাইল ফোনে বলেন, এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখির কারণে মাদকসেবীরা আমার ছেলেকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় আছি। এ ঘটনায় আমি মামলা করব। আমি হামলাকারী মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শরীয়তপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, নাজমুল মাদবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী। স্থানীয় পূর্বশত্রুতার জেরে আজ তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, নাজমুল মাদবর নামে একজনকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় আল আমিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে হামলার কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এএস