বহুল আকাঙ্খিত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছেলে শিক্ষার্থীদের নতুন হলের অ্যাসেসমেন্টের কাজ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান, সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এবং ইন্জিনিয়ারিং দফতরের পরিচালকের উপস্থিতিতে অ্যাসেসমেন্টের কাজ শুরু হয়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ২০১৮ সালের জুলাই মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ‘পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প’ নামে ৪৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকার বাজেট পাস হয়। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আরো ৩ বার প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়, যার মেয়াদ ছিল ২০২৪-এর ৩০শে জুন পর্যন্ত।
কিন্তু ২০২৪ এর জুনেও কাজ শেষ না হলে সেপ্টেম্বরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভবনগুলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সরকার পরিবর্তনের পর নির্মাণাধীন ভবনগুলোর জন্য তদন্ত কমিটি করা হয়। ফলে তদন্ত কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ কয়েকটি ভবন হস্তান্তরের কাজ আটকে যায়। যার ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আবাসিক হল এবং একাডেমিক ভবন খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন জানায় শিক্ষার্থীরা।
প্রকল্প পরিচালকের দফতর থেকে জানা যায়, ৪৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে মোট ২০টি পূর্ত কাজ ছিল। এগুলোর মধ্যে ১০ তলা ২টি আবাসিক হল, ১২ তলা দুটি একাডেমিক ভবনসহ মোট ৭টি উঁচু বিল্ডিংয়ের কাজ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন উপাচার্য যোগদানের পর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকে ভবনগুলো বুঝে নেয়ার জন্য উপাচার্যকে চিঠি দেন। তবে ভবনগুলো ঠিক করে হয়েছে কি না সেটা তদন্ত না করে ভবনগুলো বুঝে নিতে উপাচার্য অস্বীকৃতি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকেও একটি অ্যাসেসমেন্ট কমিটির মাধ্যমে ভবনগুলোর তদন্ত করে বুঝে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর ২২ ডিসেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) স্থাপত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শেখ সিরাজুল হাকিমকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্মকে সদস্য সচিব করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে পাঁচ সদস্যের অ্যাসেসমেন্ট কমিটি করা হয়।
অ্যাসেসমেন্ট কমিটি ১৫-১৭ জানুয়ারি ভবনগুলোর প্রাথমিক পরিদর্শনে আসেন। এরপর ভবনগুলোতে হ্যামার টেস্ট এবং ফ্রেও স্ক্যানার টেস্টসহ কিছু পরীক্ষা করে অ্যাসেসমেন্ট কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে টেকনিক্যাল রিপোর্ট দেবেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে দ্রুত কাজ শুরু করেছি। আমরা পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বিভিন্ন জটিলতার কারণে আমরা সে যন্ত্রগুলো এখনো হাতে পাইনি। আরো কয়েকদিন সময় লাগবে এগুলো পেতে। সেজন্য আমরা ওই কোম্পানির যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে আজ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু করেছি। আশা করি দ্রুতই শেষ হবে এই কাজ । সব কিছু ঠিক থাকলে আমরা অল্প দিনের মধ্যেই আমাদের হলগুলো খুলে দিতে পারব।
কেকে/এএম