ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মূত্রথলির প্রদাহ বা সিস্টাইটিস

ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
🕐 ১২:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০১৯

পুরুষ ও মহিলাদের মূত্রথলির আয়তন প্রায় সমান (কমবেশি ৫০০ সিসি) এবং ১৫০-২৫০ সিসি মূত্র জমলেই প্রথমবার বেগ হয়। পুরুষের তুলনায় বিবাহিত মহিলা ও মেয়ে শিশুর অঙ্গটির প্রদাহ বেশি। মূত্রপথ পুরুষের যেখানে ৭”-৮” সেখানে মেয়েদের দেড় ইঞ্চি লম্বা এবং তাও যোনী ওষ্ঠের ভেতরে পায়ুপথের সন্নিকটে। তাই সহজেই পায়ু যোনী ইত্যাদি স্থান থেকে জীবাণু মূত্রপথ বেয়ে মূত্র থলিতে ঢুকে বা সঙ্গমকালে মূত্রপথ সহজে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে প্রদাহ ঘটে।

ঘনঘন বেগ হয়, প্রস্রাব পড়ে যেতে চায়, ত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া, শীত অনুভব, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মূত্র ঘোলাটে ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়। প্রদাহ তীব্র, পুরনো, জীবাণুবিহীন (ইউরেথ্রাল সিনড্রোম) বা জীবাণুঘটিত হয়। শিশুরা প্রস্রাবের সময় চেঁচিয়ে কাঁদে। চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষার পর মূত্র পরীক্ষায় পুঁজ কোষ, রক্তকণিকা ও জীবাণু (সাধারণত ই কলাই) এবং রক্তে শ্বেতকণিকা প্রতি মাইক্রোলিটারে ১১০০০-এর বেশি পেতে পারেন।

স্বাভাবিক মূত্রে ০-৫ পুঁজকোষ থাকে। এর বেশি ও উপসর্গ থাকলে ভোরের প্রথম প্রস্রাবের মাঝামাঝি স্রোত ল্যাবের বিশুদ্ধ পাত্রে সংগ্রহ করে দ্রুত (১ ঘণ্টার মাঝে) জীবাণু চাষ (কালচার) ও অনুভূতি পরীক্ষার জন্য বলেন। মেয়েরা হাতে যোনী ওষ্ঠ ফাঁক করে হিবিটেন বা হালকা সাবান ভেজানো গজে সামনে থেকে পেছনে ঘসিয়ে পরিষ্কার করে ও পরে অন্য ১টি গজে সাবান মুছে সামান্য একটু প্রস্রাব ত্যাগ করে পরেরটুকু সংগ্রহ করে অবিলম্বে পরীক্ষাগারে দিতে না পারলে ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ফ্রিজে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখতে পারেন।

মূত্রপীড়ার সঙ্গে যোনী প্রদেশে চুলকালে ও সাদা স্রাব বের হলে তার নমুনা নিয়ে চিকিৎসক জীবাণুচাষ এবং অনুভূতি পরীক্ষায় পাঠিয়ে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেবেন। প্রয়োজনে মূত্রথলির যান্ত্রিক পরিদর্শন (সিস্টোস্কপি), পেটের সাধারণ এক্সরে (পাথর দেখতে), পুরুষদের পায়ুপথে আঙ্গুল দিয়ে প্রোস্টেট মর্দন করে রস জীবাণু চাষ ও অনুভূতি পরীক্ষা করে গনোরিয়া, সিফিলিস, ট্রাইকোনোমা ভেজাইনালিস আছে কিনা দেখবেন। সিফিলিসমুক্ত জানতে রক্তের ভি ডি আর এল পরীক্ষাও করবেন।

মূত্রথলির প্রদাহ থেকে বাঁচতে দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি খান, প্রস্রাবের বেগ আটকে রাখবেন না, মিলনের পর বিশেষ স্থান ধোবেন। মহিলারা পরিষ্কার করবেন সামনে থেকে পেছনে ও কোনো সুগন্ধি, পাউডার, এন্টিসেপ্টিক ব্যবহার করবেন না। আঁটসাঁট ট্রাউজার নিষেধ ও সুতির প্যান্টি পরবেন। ডাক্তার হাতের কাছে না থাকলে ও তলপেটে ব্যথাযুক্ত সামান্য প্রদাহ থাকলে গরম পানির বোতলে নাভির নিচে সেক ও পানির সঙ্গে ১ চামচ বাইকার্বোনেট অব সোডা (ক্ষার) মিশিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা পরপর পান করলে আম্লিক মূত্রে (গড় পি-এইচ ৬) থাকা জীবাণু আর বিস্তার লাভ করবে না। সুস্থ হয়ে উঠবেন।

অধ্যাপক ডা. হাফিজ উদ্দীন আহমদ
এমবিবিএস
এমসিপিএস
এফসিপিএস

 
Electronic Paper