পৃথিবীর বাসিন্দা
বাদশাহ্ সৈকত
🕐 ২:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২২

নিস্তব্ধ অন্ধকার সমুদ্রে প্রলয় তুলে বাঁধ ভাঙা জোয়ারে বের হয়ে দেখি-
যত্নবান একটা খোলা পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে
কিন্তু আমি অবাক হইনি।
এত আলো, এত বাতাস, প্রকৃতির এত মায়া, এত ভালোবাসার অপেক্ষাও
আমাকে অবাক করতে পারেনি।
অথবা তখন অবাক হওয়ার মতো কোনো উপকরণ
আমার বোধশক্তিকে নাড়া দিয়েছিল কি না সেটা ভুলেই গেছি।
তারপর ধীরে ধীরে এই যত্নবান পৃথিবীর উচ্ছল আলো-বাতাস
আর মৃত অন্ধকারের ভেতর হেঁটে হেঁটে-
নিজেকে শক্তিমান-বুদ্ধিমান প্রাণীর কাতারে দাঁড় করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
তারপর-
দীর্ঘ কাতারে দাঁড়িয়ে থাকার ক্লান্তি আমাকে বাস্তব পৃথিবীর ধারণায়
আচ্ছন্ন করতে করতে বিভোর শূন্যতার দিকে আহ্বান করতে থাকল।
কিন্তু আমিই শূন্যতার সেই বলয় ভেঙে বারবার
একমুখী সুখের ভাবনায় দৌড়াতেই থাকলাম।
এভাবেই আমি আমার শক্তি-ধ্যান ধারণার নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায়
সুখীদের কাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই থাকলাম।
কিন্তু সে নাগাদ কিছু মায়া অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে
নিজস্ব ভুবনের গণ্ডিতে শক্ত শিকলে আমাকে বেঁধে ফেলতে সমর্থ হয়েছে।
তারপর-
এক অন্ধকার কুঠির থেকে আরেক অন্ধকার কুঠিরে প্রবেশের আয়োজনগুলো
মোহ মায়ার তন্দ্রাচ্ছন্নতায় আমি ভুলেই গেলাম
আমার চারিপাশে অনবরত বেজে ওঠা সতর্কবার্তা
এবং ধ্বনিত সংকেতগুলোকে উপেক্ষা করে
এগিয়ে যেতেই থাকলাম আলোময় পৃথিবীর পথ ধরে।
তারপর-
এই পৃথিবীই...
যে আমাকে তার সব আয়োজনে একদিন বাঁধভাঙা জোয়ার থেকে তুলে পথ হাঁটিয়েছিল
আবার সেই পৃথিবীই আমাকে লোভ-লালসা, মোহের ঘোর কাটিয়ে
ঠেলে দিতে বাধ্য করল সেই অন্ধকার কুঠুরিতে।
