ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমিরুল মোমেনীন মানিকের গদ্যগ্রন্থ

‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’

সাজু আহমেদ
🕐 ৪:৪০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৩, ২০২৪

‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’

‘বিশুদ্ধ উচ্চারণের সংবাদকর্মী’ কিংবা ‘শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চার সুরেলা পথিক’খ্যাত আমিরুল মোমেনীন মানিক। এই দুই পরিচয়ের বাইরের তিনি একজন গুণী লেখকও। তার প্রমাণ এই তরুণ বয়সেই আলাদা আলাদা বিষয়ের বেশ কিছু মৌলিকগ্রন্থ রচনা করে তিনি নবীন প্রবীন পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখছেন এই তরুণ তুর্কী। আমিরুল মোমেনীন মানিক রচিত প্রায় দুই ডজন গ্রন্থের সিংহভাগাই মৌলিক।

তাঁর রচিত প্রায় প্রতিটি গ্রন্থেই তিনি যেন নতুন করে মেলে ধরেন। সহজ সরল অথচ ব্যতিক্রমী রচনাশৈলীতে সামাজিক বিচ্যুতি, অসামঞ্জস্যতা এবং নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধে অত্যন্ত সচেতন ও যুক্তিসঙ্গতভাবে তীব্র কুঠারাঘাত করেন। প্রায় প্রতি বছরই নতুন গ্রন্থ পাঠকের হাতে তুলে দেন মানিক। সেই ধারাবাহিকতায়গত অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় প্রকাশ হয়েছে মানিকের নতুন গদ্যগ্রন্থ‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে গানের খেয়া প্রকাশনী। প্রকাশক তাওহীদুল ইসলাম। গ্রন্থটি তিনি উৎসর্গ করেছেন দেশ বরেণ্য কবি হাসান হাফিজ এবং বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সালাউদ্দীন আহমেদকে। ৯৫ পৃষ্ঠার এই বইতে মোট ১২টি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে তথ্যনির্ভর এবং তাত্ত্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন মানিক।

‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’ গ্রন্থের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে লেখক মানিকের নিজের ভাষ্য ‘এটা গানবিষয়ক বই। অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল নিজের সাংগীতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে এরকম একটি বই করবো। বইটি সংগীতসংশ্লিষ্ট সবার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গান-বাদ্য নিয়ে জায়েজ-নাজায়েজের তর্কবিতর্কের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে এখানে’। ঠিক তাই, গন্থপাঠে উপলব্ধী এক কথায় গ্রন্থের আলোচনার বিষয়বস্তুও অনন্য। বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মানিক, লেখক হিসেবে নিজের অজির্ত অভিজ্ঞতা এবং চর্চিত নানা জ্ঞানের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস এবং আস্থার পরিচয় মেলে গ্রন্থের শুরুতে তাঁর গভীর দৃঢ়তায় কতিপয় উচ্চারণ দেখে। যেমন তিনি গ্রন্থের শুরুতেই ‘ভূমিকা’ শিরোনামে উচ্চারণ করেছেন ঠিক এই ভাবে, ‘তবে কি সঙ্গীতে সঙ্গে বাংলাদেশের সংখাগরীষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসে বিরোধ চলবেই। প্রচন্ড তত্ত তালাশ, বহুবিভাজিত মতামত, বিধি নিষেধের ঘোরটোপে অনেকে বিশ্বাসে পদাঘাত করে গড্ডালিকায় ভেসে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বিভাজন আর বহুমতের মধ্যে খুঁজেছেন ঐক্য ও ইতিবাচকতা। সোজা কথা সোজাভাবেই যদি বলি, তাহলে নিষিদ্ধ গান সেটাই, যে গান মানুষকে বিভ্রান্ত করে। আর বিশুদ্ধ বাদ্য সেটাই, যে বাদ্য মনে মধ্যে বিভ্রান্তির পরিবর্তে এক পরম শীতলতা তৈরি করে। কিন্ত এরকম বাদ্য কি আদতে আছে? সেখানেই বড় প্রশ্নের আনাগোনা। মিউজিক হালাল না হারাম সেই অমিমাংসিত প্রশ্নের দ্বন্দ্ব নিরসন করার মত আমি কোন রথি মহারথি নই। কিন্তু শিল্পের যে গুরুত্বপুর্ণ কাজ প্রশ্ন উত্থাপন, সেটি সম্ভবত সফলভাবে করতে পেরেছি এখানে...প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে কেউ কখনোও বড় হয় না। বরং চিন্তার মধ্যে সংযোজন বিয়োজন করেই নতুন পথ তৈরি করতে হয়। বাংলা সঙ্গীতে সোনাদিন আসুক।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বিশ্বাসী মানুষের হৃদয়জুড়ে শীতলতা তৈরি করুন। সংখ্যালগিষ্ঠের প্রতি দরদ তৈরি করুক। কোনো বোধহীন আবেগ আমাদেরকে চিন্তা দরজাকে রুদ্ধ করে না দিক’। এই হলো দৃঢ়চেতা লেখক মানিকের সহজ এবং সারলীকরণ স্পষ্ট উচ্চারণ। শুধু কি তাই গ্রন্থে ‘জীবনমুখী গানের কৈফিয়ত’ শিরোনামের আলোচনায় তিনি লিখেছেন ‘মানুষমুখী গান হলো সেই ধরনের গান যেখানে মানুষের উপলব্ধি অনুভূতি বিবেক ও বোধগুলো নিপুন সুতীব্র সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত হয়। মানুষমুখী গানে মানুষের সব অনুষঙ্গ থাকবে, থাকবে প্রেম থাকবে প্রতিবাদ থাকবে দ্রোহ থাকবে স্রষ্টাপ্রীতি, কিন্তু তার উপস্থাপনাভঙ্গি হবে আলাদা। এসব গানের বাণী তীব্র হবে নাড়িয়ে দেবে মনকে’। কিংবা ‘সংস্কৃতির আধ্যাত্মিক ধারা হামদ-নাথের মেহফিল’ বিভাগে তিনি তুলে ধরেছেন ‘কাজী নজরুল ইসলাম রচিত আব্বাস উদ্দীন আহমেদের কণ্ঠে ‘‘ওমন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’’ এই গানটি দিয়ে বাংলায় হয়েছিল ইসলামী গানের সূচনা,... গ্রামের সোঁদা মাটির গন্ধ নিয়ে যেন বাংলা সাহিত্যের উত্থান হয়েছিল জসীমউদ্দীনের পল্লী প্রকৃতির নিটোল বর্ণনায় স্মৃতি মুগ্ধকর কবিতা নয় শুধু, তিনি গানেও রেখেছিলেন নান্দনিক মুন্সিয়ানা।... নজরুল, আব্বাস, জসিমউদদীন সময়কালে গোলাম মোস্তফা রচিত ইসলামী সংগীত নতুন প্রাণ আবেগের সঞ্চার করেছিল...স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মতিউর রহমান মল্লিকের নেতৃত্বে প্রতি সংগীত সৈনিকদের একটি বলয় গড়ে ওঠে, তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাদ্যযন্ত্রবিহীন বিশ্বাসী ধারার গানের চর্চা শুরু করেন এবং এ ধারাকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান। তার অনুপ্রেরণায় শুধু জেলা শহর নয় বরং গ্রামেগঞ্জে পাড়ায় মহল্লায় গানের দল গড়ে ওঠে মল্লিকের এই প্রয়াস ইসলাম প্রেমী সাধারণ মানুষ বিশেষ করে স্কুল কলেজ আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের স্পর্শ করে’।

এছাড়া গ্রন্থের ‘মুক্তির লড়াইয়ে জীবনমুখী গান এবং পালাবদলের হাওয়া’ শিরোনামের আলোচনায় তিনি সগৌরবে উচ্চারণ করেছেন ‘মুক্তি পিপাসু মানুষের ৯ মাসের লড়াই, রক্তক্ষয় এবং মা-বোনের সম্ভ্রমের সুতো ধরে জন্ম নেয় নতুন দেশ-বাংলাদেশ। সদ্য জন্ম নেয়া চকচকে নতুন রাষ্ট্র বিক্ষিপ্ত স্বপ্ন, বিচিত্র ভাবনা। পশ্চিমের হাওয়া লাগে আমাদের সংস্কৃতিতে। যুদ্ধ জয়ের অনুপ্রেরণার সাংস্কৃতিক মশাল সঙ্গীতের আছড়ে পড়ে উত্তরাধুনিক চিন্তার ঢেউ। এ সময় বাংলা গানে মূলত চার ধরণের প্রবণতা লক্ষ করা যায়, প্রচলিত গতানুগতিকধারা, সৃজনশীল ধারা, পশ্চিমা ধারা এবং নিরীক্ষাথর্মী ব্যতিক্রমী ধারা। এর মধ্যে প্রচলিত ধারায় তিনি বলেছেন প্রচলিত গতানুগতিক ধারার গান মূলত পঞ্চাশ ও ষাট দশক থেকে চলে আসা স্রোতেরই ছায়ারূপ। বাণিজ্যিক ঢংয়ের এসব আধুনিক গান দিয়ে খান আতাউর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, কেজি মোস্তফাসহ অনেকেই শক্তিশালি অবস্থান তৈরি করেন। আব্দুল জব্বার, বশীর আহমেদ, ফারুক আহমেদ, সৈয়দ আব্দুল হাদীর কণ্ঠই প্রতিনিধিত্ব করে প্রচলিত গতানুগতিক ধারায়’। এভাবে তিনি বাংলা সাঙ্গীতিক ঐতিহ্যের প্রায় প্রতিটি বিষয়ের পুঙখানুপুঙ্খরূপে আলোচনার চেষ্টা করেছেন। যা পাঠকমাত্রই মুগ্ধতা স্পর্শ করে।

এমন চিরন্তন বিষয়ে প্রাণবন্ত খোলামেলা আলোচনার সুত্রে তিনি গ্রন্থে আরও যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন তার মধ্যে ‘হারাম হালালের বেড়াজালে সঙ্গীত’, ‘বাদ্যযন্ত্র হারাম না হালাল’, ‘বাদ্যযন্ত্রের পোষ্টমর্টেম’, ‘মাছ-ভাতের মত গানও জরুরি খাবার’, ‘সমাজকে বদলে দিতে পারে সঙ্গীত’, ‘গণসঙ্গীত ও গণঅভ্যুত্থান’, ‘কাশ্মীরের জন্য রুনা লায়লার দরদ’, ‘মুখোমুখি নচিকেতা ও মানিক’ এবং ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’ প্রভৃতি। লেখার বিষয়বস্তুগুলো দেখলেই পাঠক বুঝে যাবেন এর তাৎপর্য কতাটা গভীর। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে আমাদের বাংলাদেশে ধর্ম বিশেষ করে এর সঙ্গে সঙ্গীতের সম্পর্ক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক সমাজে প্রচলিত। এই সঙ্গীতের বিশুদ্ধতা, প্রয়োজনীয়তা এবং এর চর্চার সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে গল্পচ্ছলে ঐতিহাসিক দলিল ও তথ্য তাত্ত্বিক নির্ভর আলোচনার জন্য এই বইটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

মানিকের গ্রন্থপাঠকমাত্রই জানেন প্রথাগত রচনাশৈলীর বাইরে মানিকের গল্প বলা কিংবা সমসামিয়ক সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে তিনি সচেতন এবং অসচেতন মানুষকে অনেকটাই নাড়া দিয়ে যান তার মেধাদীপ্ত রচনার সৌকর্যে। সেই বৈশিষ্টমন্ডিত ঋদ্ধ ‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’ গ্রন্থটি। সুন্দর ঝকঝকে ছাপার বইটি তত্ত্ব এবং তথ্যগত আলোচনার উন্মেষের কারণে একুশে মেলায় বেশ আলোচনায় আসে। এর কারণ এইবইয়ে সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট বিষয়সহ এমন কিছুর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যা দেশের সাহিত্যের ইতিহাসে এই প্রথম, ঠিক এমন করে আগে কেউ ভাবেননি। বইয়ের প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সাবলীল, প্রাঞ্জল এবং প্রাণবন্তভাবে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হয়েছে।আলোচনার খাতিরে বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করতে গিয়ে বইতে নানা তথ্য উপাথ্য সংযোজন করেছেন মানিক। বিভিন্ন শিল্পীর উদাহরণ টেনেছেন।

বিভিন্ন ব্যক্তির কথামালাকে উদ্ধৃতি হিসেবে নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে গ্রন্থের মৌলিকত্ব ন্যূনতমক্ষুণ্ন হয়েছে মনে হলেওবাংলাদেশের সঙ্গীতচর্চার ইতিহাস ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় বিশ্বাস, সমাজ সচেতন একজন আগ্রহী পাঠককে কতটা যে ঋদ্ধ ও পরিতুষ্ঠ করেছে তা পাঠকমাত্রই আঁচ করতে পারবেন। তাছাড়া বইতে আলোচনা প্রসঙ্গে বিভিন্ন ছবিমালায় পাঠকের জন্য বাড়তি পাওনা। উপরে উল্লেখিত বিষয় ছাড়াও বইতে প্রসঙ্গক্রমে উঠে এসেছে নচিকেতার সঙ্গে তার গান নিয়ে সখ্যতা, তাতে ঋদ্ধ হয়েছে দুই বাংলার সংস্কৃতির আদান প্রদান। উঠে এসেছে রুনা লায়লা, আগুনসহ দেশবরেণ্য নানা শিল্পীর সঙ্গে তার সখ্যতার বিষয়। উঠে এসেছে বাংলাদেশের গণসঙ্গীতসহ সংস্কৃতির নানা অজানা অধ্যায়। সবমিলিয়ে সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ পাঠকের হাতে তুলে দিতে যারপর নাই খেটেছেন মানিক, যাতে তার মেধার উৎকর্ষতারই প্রমাণ মেলে। গ্রন্থটি সৃজনশীল পাঠক তথা সঙ্গীত মনস্ক অনুসন্ধানী পাঠকের সংগ্রহে থাকা জরুরী।

প্রসঙ্গক্রমে বলা যেতেই পারেশিল্পী, সাংবাদিক ও লেখক মানিকই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি ইউটিউব জার্নালিজমের ধারণা দিয়ে ইউটিউব টিভি চেঞ্জ টিভি ডট প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি হামদর্দ বাংলাদেশের তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সঙ্গীত ও সাহিত্যকর্মী হিসেবেও নিজেকে সমান্তরালে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মানিক। কর্মদ্যোমী মানিক জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গোবিন্দপুর নাংলা গ্রামে ৩ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ জামালউদ্দিন ছিলেন স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক। তিনি নেত্রকোনার সুসং দুর্গাপুরে জামাল বাহিনী গড়ে তোলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। মা রোকেয়া জামাল একজন সরকারি চাকরিজীবী। স্থানীয় মেলান্দহ উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এসএসসি এবং আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং পরে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেন।২০০০ সালে তিনি তার সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দেশীয় কয়েকটি টিভি চ্যানেলেও কাজ করেন। গান ও লেখক হিসেবেও পরিচিতি অর্জন করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত তার ৮টি অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে তার গাওয়া ‘আয় ভোর’, ‘নীল পরকীয়া’ এবং ‘সকাল হবে কি’ শিরোনামের গানগুলো দুই বাংলাতেই দারুণ জনপ্রিয়। এর বাইরে মানিকের ২২টি গ্রন্থ বের হয়েছে।

এবারের বইমেলায় বের হয়েছে গদ্যগ্রন্থ ‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’। ২০১২ সালে তার লেখা ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক’ বইটি বেস্ট সেলারের স্বীকৃতি পায়। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন ‘রয়টার্স মেকিং টিভি নিউজ অ্যাওয়ার্ড’, ‘ইউনেস্কো ক্লাব জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড’, ‘জাতীয় জাদুঘর শিল্পী সম্মাননা’, ‘রফিকুল হক দাদুভাই পুরস্কার’সহ অসংখ্য পুরস্কার। আমিরুল মোমেনীন মানিক বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি বাচসাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং ল’রিপোর্টার্স ফোরামের স্থায়ী সদস্য। মানিক জীবনমুখী গান নিয়ে কাজ করছেন দেড়যুগ ধরে। এই সময়ের মধ্যে গান নিয়ে নানা সময়ে আলোচনায় এসেছেন ‘মা যে দশ মাস দশ দিন’ মানিকের বিপুল আলোচিত গান। বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্পীদের অনেকেই গেয়েছেন তার লেখা ও সুরের গান। গানের জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় জাদুঘর সম্মাননা। দেশের বাইরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যে তার গানের শুভাকাঙ্খী রয়েছে। সবমিলিয়ে মানিক আমাদের বাংলার তারুণ্যে অহংকার। বাংলা সঙ্গীত এবং সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য গর্ব। জয় হোক মানিকের জয় হোক বাংলা সংস্কৃতির।

 

 
Electronic Paper