ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নিয়ম ছাড়াই চলছে জাবির অটোরিকশা

ওয়াজহাতুল ইসলাম, জাবি
🕐 ১০:০২ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২২

নিয়ম ছাড়াই চলছে জাবির অটোরিকশা

ঈদের পর নির্দিষ্ট নীতিমালার অধীনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অভ্যন্তরে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালু হওয়ার কথা থাকলেও নিয়ম ছাড়াই তা চলছে। অটোরিকশা চালুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চেয়ে নেয়া নির্দিষ্ট সময় ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেলেও তার কোনো বাস্তবায়ন পরিলক্ষিত হয়নি।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, পূর্বের চেয়ে বেড়েছে অটোরিকশার সংখ্যা। তবে অনেক রিকশারই নেই লাইসেন্স। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত গতিতে চলছে রিকশাগুলো। বার বার ওভারটেকিং করছে একটি অপরটিকে। এক্ষেত্রে অনেক সময় যাত্রীই অতিরিক্ত গতিতে রিকশা চালানোর তাড়া দিচ্ছেন রিকশা চালককে। এতে যেকোন সময় আবারও ঘটতে পারে বড় দূর্ঘটনা। তবে দূর্ঘটনা ঘটলেও চেনার উপায় নেই রিকশা কিংবা রিকশা চালককে। কারণ তাদের সনাক্ত করার জন্য নেই কোন ব্যবস্থা।

এর আগে ক্যাম্পাসে যথাযথ নীতিমালা তৈরি করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালুর জন্য আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল উপাচার্য বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নের্তৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ক্যাম্পাসের রিকশাচালকদের নির্দিষ্ট ড্রেস কোড নির্ধারণ, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স, গাড়ি নাম্বার ও রিকশায় গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এছাড়া ক্যাম্পাসে দূর্ঘটনা ও যানবাহনের গতিরোধে স্পিড ব্রেকার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৫ মে পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয় ও তা বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি করে দেয়। ইতোমধ্যে উক্ত সময় পেরিয়ে গেলেও তার কোনো বাস্তবায়ন ঘটেনি।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে কমিটির প্রধান ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কমিটির চিঠি পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ার দুদিন পূর্বে। রিকশার নিয়ম-নীতির ব্যাপারগুলো একটু জটিল। আমরা ইতোমধ্যে দুটি মিটিং করেছি ও উপাচার্যের সাথেও এ নিয়ে আলাপ করেছি। এছাড়া আগের নীতিমালা গুলো নিয়ে স্টেট অফিসের সাথেও বসেছি। সব মিলিয়ে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

জানা যায়, এপ্রিলে উপাচার্যের সাথে বৈঠকের পরে গত ১৯ এপ্রিল রিকশা চলাচলের নিয়ম-কানুন বাস্তবায়ন নিয়ে কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির নোটিশ গত ২৮ এপ্রিল রেজিস্ট্রার কর্তৃক স্বাক্ষরিত হলেও তা কমিটির সদস্যদের নিকট পৌছায় ঈদের পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে।

কমিটির নোটিশ সদস্যদের নিকট পাঠাতে দেরী হওয়ার কারণ জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সাথে দেখা করতে গেলে প্রথমদিন তিনি কাজের সময় (বিকাল ৪টা) শেষ হয়ে গেছে বলে দেখা করেননি। একদিন পর আবার অফিসে গিয়ে জানা যায় তিনি উপাচার্যের সাথে মিটিং এ আছেন। এরপর দুপরে কল দিলে প্রথমবার ওয়েটিং এ পাওয়া যায়। এর দশ মিনিট পর পাঁচবার কল ‍দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ২৮ এপ্রিলের পর ছুটি হয়ে গিয়েছিল। হয়তো এই কারণে পৌছাতে ‍দেরী হয়েছে।’

এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেখানে গত ১৯ এপ্রিল কমিটি করা হয়েছে তা রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর করতে এতো দেরী করেছেন কেন জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘আমিতো আমার আদেশ সময়মতো দিয়েছি দিয়ে দিয়েছি। উনিই ভালো বলতে পারবেন কেন দেরী করেছেন।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘কমিটি আমার সাথে বসেছে। আমি তাদের নীতিমালায় কি কি যোগ করতে হবে বলে দিয়েছি। ভাড়া সংক্রান্ত কমিটিরও মিটিং হয়েছে। চূড়ান্ত হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা। আমি আশা করছি আগামি সপ্তাহের মধ্যেই সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আমি আবার ওনাদের সাথে কথা বলবো যাতে আগামি সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্টটা দিয়ে দেয়।’

 
Electronic Paper