ফাল্গুন মাস এলেই লিচুর মুকুলের ম-ম গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ঈশ্বরদীর প্রতিটি গ্রামে। কিন্তু এবার চিরাচরিত মুকুলের গন্ধও নেই উল্টো কচিপাতা গজাচ্ছে, মুকুল কম আসায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বাগানমালিক, চাষি ও ব্যবসায়ী।
এবার লিচুর মুকুল কম আসার জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করছেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা। লিচু ঈশ্বরদী এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল, প্রতিবছর এ উপজেলায় ৪৫০-৫০০ কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হয়। লিচু চাষের ওপর নির্ভর করে এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা।
উপজেলার ‘লিচু গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত মানিকনগর, মিরকামারী, চরমিরকামারী, কদিমপাড়া ও আওতাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, শত শত বাগানের লিচুগাছে মুকুলের পরিবর্তে নতুন পাতা গজিয়েছে, গাছে নতুন পাতা গজালে মুকুল আসে না। এজন্য লিচু উৎপাদন নিয়ে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন চাষিরা। ফাল্গুন মাসের ১৭/ ১৮ দিন অতিক্রম হতে চললেও চাষিরা লিচু বাগান পরিচর্যা করছেন না বাগানে সার, কীটনাশক ও মুকুলের জন্য ব্যবহৃত ওষুধও ব্যবহার করছেন না।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগানে ১০০ লিচু গাছ থাকলে সেখানে মাত্র ১০-২০টি গাছে মুকুল এসেছে। মুকুলের পরিমাণও বেশ কম অতীতে এত কম মুকুল কখনো দেখা যায়নি। লিচু চাষে জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক উপজেলার মিরকামারী গ্রামের আব্দুল জলিল কিতাব ওরফে লিচু কিতাব বলেন, আমি ৪৫ বছর ধরে লিচুর আবাদ করছি এমন বিপর্যয় কখনো হয়নি। শুধু আমার নয়, পুরো দেশে লিচু চাষের এ অবস্থা এজন্য দায়ী করতে হলে প্রথমে পরিবর্তিত আবহাওয়াকে দায়ী করতে হবে পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে আগামীতে লিচুর ভালো আবাদ আর হবে কি না সন্দেহ আছে। এ বছর ১০ শতাংশও লিচুর ফলন পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
এই বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, লিচু চাষের জন্য ঈশ্বরদী বিখ্যাত এ উপজেলার ৩১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে এ বছরও গাছে মুকুল এসেছে তবে অন্য বছরের তুলনায় মুকুলের পরিমাণ কম এর কারণ হিসেবে আমরা অনুমান করছি, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে।
কেকে/এএস