রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আজ আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এবারও উৎপত্তিস্থল নরসিংদী। মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে জেলাটিতে এটি পঞ্চম ভূমিকম্প।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। ইউরো-মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার এ তথ্য জানিয়েছে।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে আর নরসিংদী থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে। এর গভীরতা ছিল ৩০ কিলোমিটার। মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে জেলাটিতে এটি পঞ্চম ভূমিকম্প। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। তবে সর্বশেষ ভূমিকম্পে কোনও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘ভোরে সবাই ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ খাট, আসবাবপত্রসহ পুরো ঘর কাঁপতে থাকে। পরপর কয়েকবার কেঁপে ওঠার পর বুঝতে পারি ভূমিকম্প হচ্ছে। আতঙ্কে ঘর থেকে বের হয়ে যাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরপর কয়েকবার ভূমিকম্প হওয়ায় ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেছে।’
অন্য এক বাসিন্দা শুভ্রজিত বলেন, ‘নরসিংদীতে যেভাবে পরপর ভূমিকম্প হচ্ছে, আমরা ট্রমাটাইজ হয়ে যাচ্ছি। কী করব বুঝতে পারছি না। সবকিছুই হতবম্ভ লাগছে।’
স্বপন মিয়া নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় ঘুমের মধ্যে ছিলাম, তাই কিছুটা টের পাইনি। এখন খুব ভয় লাগছে। এভাবে বারবার ভূমিকম্প হলে নরসিংদীসহ পুরো দেশের কী অবস্থা হবে চিন্তা করতে পারছি না।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর গণমাধ্যমকে জানান, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীর শিবপুরে। এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প; রিখটার স্কেলে ছিল ৪ দশমিক ১ মাত্রা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টায় দেশে ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীরই ঘোড়াশাল। সেটি ছিল ৪ মাত্রার ভূমিকম্প।
মাঝে গত সোমবার রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৯।
তারও আগে গত ২১ নভেম্বর কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন।
রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার বাড্ডা, আরেকটি সেই নরসিংদীতেই।
কেকে/এআর