শীতের এক কুয়াশাভেজা সকাল। চারদিকে সাদা কুয়াশা আর নরম রোদের আভা। খুকিমণি জানালার কাঁচ ঝাপসা করে শ্বাস টেনে বলল,
-মা, আজ খুব ঠান্ডা!
মা হাসিমুখে বললেন,
-সে জন্যই তো তোমার মোটা জামা, জুতা আর সাদা মোজা বের করে রেখেছি।
খুকিমণি খুশিতে লাফিয়ে লাফিয়ে তৈরি হতে লাগল। মোটা কোট চপল, পায়ে পরল নতুন জুতা, আর সাদা মোজা দেখে মনে হলো যেন তুলোর মতো নরম। শেষমেশ মাথায় পরল লাল মানকি টুপি- যা পরলে সে নিজেকে গল্পের রাজকন্যা মনে করে।
বাড়ি থেকে বের হতেই শীতের বাতাসে কেঁপে উঠল খুকি, কিন্তু সে ভয় পেল না। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার পাশের দোকান থেকে টক-মিষ্টি আচার কিনল। দোকানদার মামা বললেন,
-খুকিমণি আজ খুব সাজুগুজু!
খুকি হেসে তার রঙিন ঘড়ি দেখাল। গলায় ঝুলছে পুঁতির ছোট্ট হার, আর গলায় জড়িয়ে আছে তার প্রিয় ডরিমন মাফলার। মাফলারটা এত নরম যে তাকে জড়িয়ে ধরেছে যেন নীল রঙের কোনো কার্টুন বন্ধুর আলিঙ্গন।
স্কুলের পথে হাঁটতে হাঁটতে খুকি দেখল ফুলের গাছে শিশির জমে আছে। গাছের পাতায় ছোট ছোট পানির দানা, যেন কেউ রূপার বিন্দু ছড়িয়ে রেখেছে। সে হাত বাড়িয়ে একটুখানি ছুঁয়ে দেখল, ঠান্ডা, খুব ঠান্ডা!
স্কুলে পৌঁছে খুকি বন্ধুরা সবাই তার সাজ দেখে খুশি হলো। রেশমি কালো শুকনো চুলে নারিকেল তেল মেখে খুকির চুল চকচক করছিল। বন্ধুরা চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
-খুকি, তুমি তো আজ ঠিক পুতুলের মতো লাগছ!
খুকিমণি লাজুক হাসিতে বলল,
-শীত তো এসেছে, তাই একটু সাজলাম।
তারপর ঘণ্টা বাজতেই সবাই মিলে দৌড়ে ক্লাসে ঢুকে গেল।
কেকে/এমএ