অনুসন্ধানে জানা গোছে, ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৭৫৩৪ নম্বর সরকারি গাড়িটি ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৮২৩ কিলোমিটার চলার তথ্য লগবইয়ে রয়েছে—গড়ে প্রতি মাসে ১৭০ কিলোমিটার। অপরদিকে অফিস থেকে ৯ মাসে গড়ে প্রতি মাসে ৮০০ কিলোমিটার দেখিয়ে মোট ৭ হাজার ২০০ কিলোমিটারের ভিত্তিতে ১ হাজার ৪৪০ লিটার জ্বালানির বিল উত্তোলন করা হয়েছে। দুই দফায় উত্তোলিত টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩০০ টাকা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিন ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর দায়িত্ব নেন। ওই মাসে ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৭৫৩৪ নম্বর গাড়িটির লকবই অনুযায়ী গাড়িটি চলাচল করেছে ৮৭ কিলোমিটার, নভেম্বর মাসে চলাচল করেছে ৬৭ কিলোমিটার, ডিসেম্বর মাসে চলাচল করেছে ৪৯১ কিলোমিটার, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চলাচল করেছে ১৫২ কিলোমিটার, ফেব্রুয়ারি মাসে চলাচল করেছে ১২১ কিলোমিটার, মার্চ মাসে চলাচল করেছে ২৯০ কিলোমিটার, এপ্রিল মাসে চলাচল করেছে ২৪৪ কিলোমিটার, মে মাসে চলাচল করেছে ১৩০ কিলোমিটার কিলোমিটার এবং জুনে মাসে চলাচল করেছে ২৪১ কিলোমিটার।
গাড়ির চালক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন মো. বাবুল মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি এখন আর শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে কর্মরত নেই। বদলি হয়ে গেছি। আমার কাজ ছিল শুধু গাড়ি চালানো। কর্মকর্তা যেখানে যাবার জন্য নির্দেশ দিতেন সেখানেই যেতাম। চলাচলের পর গাড়ির মিটার দেখে কত কিলোমিটার চলাচল করেছে তা লগবইয়ে লিখে রাখতাম। গাড়িটির লগবইয়ে স্বাক্ষর করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মহোদয়। অফিসের মাধ্যমেই গাড়িটির জ্বালানি তেলের বিল উত্তোলন করা হয়ে থাকে। এখানে চালকের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরো জানান, বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তাকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাবিনা
ইয়াসমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গাড়ি যতটা চলেছে ততোটুকুই জ্বালানির
বিল তোলা হয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, লগবই অফিসে বা গাড়িতে রাখা হয় না, থাকে তার বাসায়। এছাড়া স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগের ইঙ্গিতও দেন তিনি।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম খান বলেন, সরকারি গাড়ির প্রকৃত ব্যবহারের চেয়ে বেশি বিল তোলা সম্ভব নয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/লআ