বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা      ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও সাত, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭      ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প      দুদকের সব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক সম্পত্তির হিসাব দিতে হবে      প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি      নির্বাচনী জোটের আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে : রাশেদ খান      গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : আমান      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
হতে পারে বড় মাত্রার ভূমিকম্প এখনই প্রস্তুতি প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: রোববার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:২৪ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

দুপুরের পর হালকা ধাক্কার মতো শুরু হওয়া যে কম্পন দ্রুতই প্রবল এক ঝাঁকুনিতে পরিণত হলো- তার উৎপত্তিস্থল মাধবদী। আগারগাঁও সিসমিক সেন্টার থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরের এই কেন্দ্র বাংলাদেশকে আবারো স্মরণ করিয়ে দিল- আমরা এক ভূমিকম্প-ঝুঁকির চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছি। রিখটার স্কেলে বাংলাদেশ জানিয়েছে ৫.৭ মাত্রা, যুক্তরাষ্ট্র ৫.৫। 

মাত্রাতেই হোক পার্থক্য, কিন্তু ক্ষতিটা বাস্তব- ১০ জনের মৃত্যু, শত শত মানুষ আহত, বহু ভবনে ফাটল, কয়েকটি হেলে পড়া, বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, মাটি ফেটে যাওয়া, আর ঘরের জিনিসপত্র ছিটকে পড়া। প্রশ্ন এখন একটাই- আরেকটু বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে আমাদের কি হবে?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আতঙ্ক নয়, কঠিন বাস্তবতাই সামনে আসে। দেশের অন্যতম কাঠামো-প্রকৌশলী শামীমুজ্জামান বসুনিয়া সেপ্টেম্বরেই সতর্ক করেছিলেন-‘ভূমিকম্প হলে যারা বেঁচে যাবে তারাও থাকতে পারবে না।’ তার অভিমত ছিল, আগুন, পানি ও পয়ঃপ্রণালির নাজুক অবস্থা এমন হবে যে, উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেও পারবেন না, দুর্গন্ধে পরিবেশ অচেনা হয়ে যাবে। 

তিনি আরো বলেছিলেন, দেশে দেড় লাখ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ- বরং বাস্তবে ‘অল্প কিছু ভবন ছাড়া সবই ভঙ্গুর।’ এ সতর্ক বার্তাগুলোকে এখন হালকা করে দেখার আর সুযোগ নেই। কারণ ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন- এ অঞ্চলে ভূমিকম্প প্রতিদিনই হচ্ছে, ২-৩ মাত্রার কম্পনগুলো আমরা টেরই পাই না। ডাউকি ফল্টসহ একাধিক সক্রিয় ফল্টলাইনের ওপর রয়েছে বাংলাদেশ। যে কোনো সময় যে কোনো একটি ফল্টের সামান্য পরিবর্তন ভয়াবহ বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে। 

৫.৫-৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পই যখন বহুতল ভবনে ফাটল ধরিয়ে শ’খানেক মানুষকে আহত করতে পারে, তখন ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির কথা কল্পনাই শিউরে ওঠার মতো। আমাদের নগরায়ণ নিয়ন্ত্রণহীন, ভবন নির্মাণে অনিয়ম স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, জরুরি সেবার অবকাঠামো দুর্বল, উদ্ধার প্রস্তুতি সীমিত। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো- নাগরিক নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রশাসনিক উদাসীনতা। আমরা ভুলে যাই, ভূমিকম্প কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। এটি না সরকার দেখে, না বিরোধী দল দেখে- এটি কেবল মানুষ ধ্বংস করে।

তাই এখনই জরুরি তিনটি পদক্ষেপ- ১. ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। আইন প্রয়োগে শূন্য সহনশীলতা। ২. ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সমন্বয়ে সমন্বিত মহড়া ও প্রশিক্ষণ। ৩. স্কুল, কলেজ, অফিস- সব জায়গায় ভূমিকম্প-সচেতনতা বাধ্যতামূলক করা। 

আসলে আমরা আর ‘সতর্ক বার্তা’ পর্যায়ে নেই- এখন ‘সতর্ক সংকেত’ বাজছে। এই ভূমিকম্প আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে- ঢাকা ও আশপাশের শহরগুলো এক বড় বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অবশ্যই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানো আমাদের হাতে নেই, ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্পূর্ণই আমাদের হাতে। আর সেই প্রস্তুতি নেওয়ার সময়টা এখনই।

কেকে/এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  ভূমিকম্প   প্রস্তুতি প্রয়োজন  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় বীজ বিক্রিতে অনিয়মের দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
শ্রীপুরে ইভটিজিং ইস্যুকে কেন্দ্র করে স্কুলছাত্রের ছুরিকাঘাত, আহত ৬
শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে না লড়ার সিদ্ধান্ত জেডআই খান পান্নার
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১২.৫ ডিগ্রি
মোহনপুরে বিএসটিআই লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

সর্বাধিক পঠিত

ইয়ুথ ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে ব্যারিস্টার খোকনের বরণ
পাটগ্রাম উপজেলায় সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে 'চতুরবাড়ী বিওপি'র যাত্রা
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প
নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
দুই ট্রলারসহ সেন্টমার্টিনে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close