লিবিয়ায় মাফিয়াদের গুলিতে মারা গেল ৩ বাংলাদেশি। অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় গুলি করলে প্রাণ হারায় মাদারীপুরের ইমরান, মুন্না আর বায়েজিদ।
নিহতের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ভালো চাকরি হচ্ছিল না ইমরান খানের (২৫)। স্বপ্ন দেখেছিলেন, ইতালি গিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী চাকরি করবেন, কিন্তু তা আর হলো না।
ইমরান মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের আদিত্যপুর গ্রামের হাজী মো. তৈয়ব আলী খানের ছেলে।
স্বজনরা জানায়, একটু ভাল থাকতে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ৮ অক্টোবর বাড়ি ছাড়েন ইমরান খান। সরাসরি ইতালি পৌঁছে দিবে এমন শর্তে প্রতিবেশী ও মানবপাচার চক্রের সদস্য শিপন খানের সাথে চুক্তি হয় ২২ লাখ টাকার। কিন্তু ইমরানকে লিবিয়ায় আটকে নির্যাতন করে এবং পরিবার থেকে আরো ১৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়। শেষমেষ ১ নভেম্বর লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে ভুমধ্যসাগরে মাফিয়ার গুলিতে মারা যায় ইমরান।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ইমারনের মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। শুধু ইমরান নয়, একইভাবে মাফিয়াদের গুলিতে ওইদিন মারা যায় রাজৈর উপজেলার দুর্গাবদ্দী গ্রামের ইমারাত তালুকদারের ছেলে মুন্না তালুকদার এবং একই উপজেলার ঘোষলাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস শেখের ছেলে বায়েজিত শেখ।
৩ যুবকের মৃত্যুর পর লাশ ফেলে দেয়া হয় সাগরে। এমন মুত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। ঘটনা জানাজানি হলে ঘরে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা দালালচক্রের পরিবারের লোকজন। শিপনের স্বজনদের দাবি, এই ঘটনায় জড়িত নন শিপন। জোর করে তিনি কারোরই পাসপোর্ট নেয়নি।
অভিযোগ আছে, কয়েক বছর ধরে লিবিয়ায় অবস্থান করছে শিপন। এরপর আত্মীয়-স্বজনরদের মাধ্যমে এলাকার যুবকদের খুব সহজে ইতালি নেয়ার প্রলোভন দেয় সে। এর আগেও মৃত্যুর মত এমন ঘটনা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানায়, ‘লিবিয়ায় গুলিতে ৩ যুবকের মৃত্যুর খবর বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। দালালদের কোন প্রকারেই ছাড় দেয়া হবে না।’
কেকে/বি