চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর–দক্ষিণ) আসনে বিএনপির ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একই দিনে মনোনয়ন পরিবর্তন ও পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে ফেসবুকে পৃথক পুনর্বিবেচনার পোস্ট করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক মন্ত্রী নুরুল হুদার জ্যেষ্ঠ ছেলে তানভীর হুদা এবং ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য অধ্যাপক ডা. সরকার মাহাবুব আহমেদ শামীম।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকায় এই দুই নেতার নাম না থাকায় সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও আলোচনা তৈরি হয়। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে তাদের ফেসবুক পেইজে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো পোস্ট ভাইরাল হতে থাকে।
সকালে ডা. সরকার শামীম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেন— “চাঁদপুর–২ মতলব উত্তর–দক্ষিণ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি রাখছি — রিভিউ চাঁদপুর-২।” মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে শতাধিক কমেন্টে নেতাকর্মীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানান। শতাধিক কমেন্টে নেতাকর্মীরা লেখেন “মতলব উত্তর–দক্ষিণে যোগ্য নেতৃত্ব আনতে হলে মনোনয়ন পরিবর্তন করতে হবে।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ডা. শামীম ছিলেন মনোনয়ন প্রত্যাশী। প্রাথমিক তালিকায় নাম না থাকায় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত শুক্রবার মতলব দক্ষিণে শহীদ জিয়া গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মতলববাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। আমরা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে রিভিউ আবেদন জানিয়েছি।’
কারা নির্যাতিত ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন বলেন, “১৭ বছরের আন্দোলনে আমরা ত্যাগ করেছি, সহযোদ্ধা হারিয়েছি। ত্যাগীরা কখনো অবমূল্যায়িত হবে না। চাঁদপুর-২ এ যে নেতৃত্বে সবাই নিরাপদ থাকবে, তিনি ডা. সরকার শামীম।”
উপজেলা বিএনপির সহ ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক তৌফিক আজিম মিশু বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়নের সময় ডা. শামীম ছিলেন রাজপথে। আমরা তার নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। তিনি পরীক্ষিত নেতা।”
কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য এডভোকেট মফিজুল ইসলাম সরকার বলেন, “চাঁদপুর-২ এর জনগণ ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষিত নেতৃত্ব চায়। ডা. শামীম সেই যোগ্য নেতা।”
উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শাহজাহান সরদার বলেন, “নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ও আস্থার জায়গায় ডা. শামীম বহু আগেই এগিয়ে। পুনর্বিবেচনা হওয়া উচিত।”
অন্যদিকে, একই দিনে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক মন্ত্রী নুরুল হুদার ছেলে তানভীর হুদা ও তার ফেসবুক পেজে মনোনয়ন রিভিউ দাবি করে পোস্ট করেন। তার পোস্টেও নেতাকর্মীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তাকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন।
মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার মজুমদার বলেন, “হুদা পরিবার মতলবের রাজনীতিতে ত্যাগ, সততা ও গণমানুষের নেতৃত্বের প্রতীক। তানভীর হুদা শিক্ষিত, দক্ষ ও প্রজন্মের নেতা। তাকে মনোনয়ন দিলেই এলাকাবাসী উপকৃত হবে।”
মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বিল্লাল মৃধা বলেন, “সংগঠন, আন্দোলন ও সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় তানভীর হুদা সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী। জনগণের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।”
উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমু বলেন, “দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তানভীর হুদা তরুণ নেতাদের অনুপ্রেরণা। চাঁদপুর-২ আসনের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তার হাতেই নিরাপদ।”
চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির ঘোষিত মনোনয়নকে ঘিরে এখন নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ সাবেক মন্ত্রী ছেলে তানভীর হুদা, ডা. সরকার শামীম এবং আব্দুস শুক্কুর পাটোয়ারীর মধ্য থেকে একজনকে পুনঃমনোনয়ন দেওয়ার দাবি তুলছেন।
কেকে/ আরআই