বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার পানের রাজ্য নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী এই পান চাষীদের উদ্যোগে পানের ন্যায্য মূল্য, প্রণোদনা ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় উজিরপুর উপজেলার একজন সফল পান চাষী গুরুদাস ব্যানার্জি শ্যামলের বাড়িতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উজিরপুর উপজেলার পানের বাজারে হঠাৎ করে ধস নামায় চরম বিপাকে পড়েছেন উপজেলার হাজারো পানচাষী। বাজারে পানের দাম দিনকে দিন কমতে থাকায় এই কৃষি পেশায় নিয়োজিত কৃষকরা পড়েছেন অর্থনৈতিক সংকটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর, শোলক, বামরাইল ও গুঠিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ পানের চাষাবাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। পানের ভালো দামের আশায় বহু কৃষক পৈতৃক জমিতে পান বরজ গড়ে তুলেছেন। কিন্তু গত ২ মাস ধরে বাজারে পানের দাম আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় চাষীরা ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন।
বক্তারা বলেন, উজিরপুরের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে এতদিন পানের কদর থাকলেও বর্তমানে পান রপ্তানিতে সরকারের কেজি প্রতি ৫ ডলার ধার্য করায় বাংলাদেশ থেকে পান রপ্তানি প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। সে সুযোগে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পানের বাজার দখল করে নেয়। এতে চরম অর্থনৈতিক দুর্ভোগে পরে এ দেশের চাষীরা। এই অর্থকরী ফসলটি এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে না বলে কৃষকদের দাবি।
এছাড়া পান উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল বাঁস, সরিষার খৈল, সার, ঔষধ ও উৎপাদন সংক্রান্ত ব্যয়ের উচ্চমুখী আর বিক্রয় ঘাটতি নিম্নমুখী হওয়ায় কৃষকরা অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এক সময় যে পান প্রতি বিড়া ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হতো, বর্তমানে সেই পান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০-৬০ টাকায়। অথচ পান বরজ পরিচালনায় খৈল, বাঁশের শলা ও ছাউনি তৈরির ক্যাশির দাম প্রায় দেড়গুণ বেড়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ উঠছে না, বরং ধার দেনা করে বরজ মেরামত করতে হচ্ছে চাষীদের।
এ সময় উজিরপুর পান চাষী গুরুদাস ব্যানার্জি শ্যামল এর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বক্তা অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উজিরপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
এছাড়া দিকনির্দেশনা মুলক বক্তব্য রাখেন নৃপেন্দ্র নাথ বাড়ৈ, মো. জলিলুর রহমান, জাফর আহমদ তালুকদার প্রমুখ।
কেকে/বি