রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫,
১০ কার্তিক ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ২৫ দিনে প্রবাসী আয় ছাড়াল ২ বিলিয়ন ডলার      ডেঙ্গুতে একদিনে মৃত্যু ৪, হাসপাতালে ১১৪৩      বঙ্গোপসাগরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সৃষ্টি হবে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’      নভেম্বরে ওমরাহ করতে যাবেন তারেক রহমান      নিহতের পরিবার পাবে ক্ষতিপূরণ, চাকরি দেওয়া হবে পরিবারের সদস্যকে      নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে বিভিন্ন পরাশক্তি ও এজেন্সি সক্রিয় হবে      আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বানিয়েছে জাতীয় পার্টি : আখতার      
দেশজুড়ে
চন্ডিডহরে সেতুর অভাবে তিন উপজেলার লাখো মানুষের দুর্ভোগ
নোহান আরেফিন নেওয়াজ, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ)
প্রকাশ: রোববার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:৫৫ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

#যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে পিছিয়ে জীবনযাত্রার মান 
#নৌকাডুবিতে ঘটেছে প্রাণহাণী 
#৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও অনুমোদন হয়নি

সরকার আসে সরকার যায়, তবুও ভাগ্য বদল হয় না সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার মিলনস্থল ‘চন্ডিডহর’ নামক এলাকার আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের লাখো মানুষের। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে অবকাঠামোগত উন্নয়নে দেশের চিত্র আমূল পাল্টে গেলেও ভাগ্য বদল হয়নি চন্ডিডহর পাড়ের বাসিন্দাদের। একটি সেতুর অভাবে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, ব্যবসায়-বাণিজ্যসহ সব দিকে পিছিয়ে আছেন শান্তিগঞ্জসহ তিন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। 

স্বাধীনতার পর থেকে এই তিন উপজেলার মানুষ বিভিন্ন সময়ে পাঁচজন প্রভাবশালী মন্ত্রী পেলেও চন্ডিডহর ব্রিজ বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেননি কেউই। ফলে আক্ষেপের সুরে এই এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘রাজা আসে রাজা যায়, আমাদের আর দুর্দশা ফুরায়না।’

শান্তিগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম পাইকাপন, জগন্নাথপুর উপজেলার তেলিকোনা এলাকা ও দিরাই উপজেলার হোসেনপুর বাজারকে পৃথক করেছে মহাসিং নদী, ডাউকা নদী ও খামারখাল নদীর মোহনা। তিন উপজেলাকে পৃথক কর এই মোহনাকে চন্ডিডহর নামে অভিহিত করেন স্থানীয়রা। 

সরেজমিনে চন্ডিডহরে দেখা যায়, হোসেনপুর বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত যাত্রী স্টিলের একটি ট্রলার প্রথমে পাইকাপন পাড়ে যাত্রী উঠানামার কাজ শেষ করে পরে জগন্নাথপুরের তেলিকোনার পাড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। একইভাবে তেলিকোনা পাড় থেকে যাত্রী নিয়ে পাইকাপন পাড়ে যাত্রীর উঠানামার কাজ শেষে হোসেনপর বাজার পাড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। 

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন তিন উপজেলার শত শত স্কুল-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী, হোসেনপুর বাজারে আসা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীসহ অসংখ্য মানুষ চন্ডিডহর পাড়াপাড় করেন। এছাড়াও ফেরি করা ওই ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিদিন অসংখ্য মোটরসাইকেলও পারাপার হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটে দুর্ঘটনা। 

শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাইকাপন গ্রামের বাসিন্দা ও আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়া বেগম, মাহবুবা আক্তার ও রুবেল জানান, আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে চন্ডিডহর পাড় হই। অনেক সময় নৌকা ডুবে যায়। সাঁতার না জানায় অনেক আগে চন্ডিডহরে নৌকাডুবিতে আমাদের ফুইশ্যার স্যার মারা গিয়েছিলেন। এছাড়া পারাপারে বিলম্বের কারণে অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে ক্লাসে বা পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারি না। এতে স্যারদের বকা শোনার পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার চরম ব্যাঘাত ঘটছে। 

ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান জীবান জানান, চন্ডিডহরে ব্রিজ না থাকায় আমরা সিলেট-সুনামগঞ্জের সাথে সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি না। ফলে, সিলেট বা অন্য কোনো জায়গা থেকে নিত্যপণ্যের জিনিস আমরা যে দামে কিনে আনি, তার সাথে বহন খরচ যোগ করে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে যায়। এতে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হই, তেমনই ক্রেতারাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। 

স্থানীয় মজু মিয়া, সেলাল মিয়া ও রওশন আলী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে আমরা তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দাবি করে আসছি, চন্ডিডহরে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য। একটি সেতুর অভাবে আমরা কতটা দুর্দশায় আছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে শত শত মানুষ পারাপার করেন। অনেক সময় নৌকা ডুবে যায়। আবার ইমার্জেন্সি রোগী পারাপারেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিছু দিন আগেও এক ডেলিভারি রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় রাস্তাতেই শিশুটি মারা যায়।’

তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভোটের সময় এলেই কেবল নেতারা আমাদের ভোটের আশ্বাস দেন। কিন্তু আমাদের কাঙ্ক্ষিত ব্রিজ আর হয় না। বিভিন্ন সময় সরকারি দপ্তরের লোক এসে মাটি পরীক্ষা, ব্রিজের মেজারমেন্টের কাজ করে যান। শুনেছি অনেক বড় বাজেটে সেতুটি করা হবে। কিন্তু এখনও দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখতে পারছি না। তাই, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের দাবি- দ্রুত আমাদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে চন্ডিডহর সেতুর অনুমোদন দেওয়া হোক।’

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা এলজিইডির নির্বাহি প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগের সরকারের সময় ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুসহ দিরাইয়ের জগদল ইউনিয়নের সড়কে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিলো। প্রকল্পটি মন্ত্রনালয়ে পড়ে আছে, এখনও অনুমোদন পায়নি। প্রকল্প পাস হলে আমরা কাজ করতে পারতাম। জানাশোনা লোকজন যদি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে প্রকল্পটি খুঁজে বের করে নাড়াচাড়া করেন এবং জায়গামত নক দিতে পারেন, তাহলে প্রকল্পটি পাস হতে পারে।’

কেকে/ এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  চন্ডিডহর   সেতুর অভাব  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বিএনপি দুর্দিনেও মানুষের পাশে থাকে : মফিকুল হাসান
ভোটের পাঁচ দিন আগে স্থগিত সিলেট চেম্বারের নির্বাচন
মস‌জি‌দে আমির হামজা‌কে রাজ‌নৈ‌তিক বক্তব্য দি‌তে নি‌ষেধ করায় বিএন‌পি নেতা লাঞ্ছিত
দুধকুমার নদের পানির স্রোতে ভেসে গেল মৎস্য উদ্যোক্তা সিদ্দিকের স্বপ্ন
নিজেই নিজের গোপনাঙ্গ কাটলেন পোশাক শ্রমিক

সর্বাধিক পঠিত

বাউফলে তিন পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৫ লাখ টাকার মাছ নিধন
ট্রেনে টিকিট কালোবাজারি রোধে রেলওয়ের বিশেষ অভিযান
কুমিল্লায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম পূরণের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধ
দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে বিএনপিকে ভোট দিতে হবে
মোহাম্মদপুরে ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা, গ্রেফতার ১

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close