ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের কুরনুল জেলায় জাতীয় মহাসড়ক ৪৪-এ হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুগামী একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাস মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন ধরে কমপক্ষে ২০ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন এবং বহু যাত্রী দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে চিন্নাটেকুরু গ্রামের কাছাকাছি এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বাসটিতে ৪১ জন যাত্রী ছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত ২১ জনকে খুঁজে পেয়েছেন। বাকি ২০ জনের মধ্যে ১১ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে, আর ৯ জনের এখনও পরিচয় জানা যায়নি। আহত যাত্রীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশের তথ্যমতে, বেসরকারি মালিকানাধীন বাসটি ৪৪ নম্বর জাতীয় মহাসড়ক ধরে দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। সংঘর্ষের পর বাইকটি বাসের সামনের অংশে আটকে যায়। এরপর অল্প কিছু দূর যাওয়ার মধ্যেই বাসে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় বাসের বেশির ভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুন লাগার পর অনেকে জানালা ভেঙে বেরিয়ে প্রাণ বাঁচান, তবে অনেকেই বের হতে পারেননি।
স্থানীয় কিছু লোকজন যাত্রীদের চিৎকার শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং খবর দেন ফায়ার সার্ভিসকেও। কিন্তু ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, বাসটি প্রায় আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের অনেকের দেহ এতটাই পুড়ে যায়– তাদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। আহতদের কুর্নুল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ আরো জানায়, দুর্ঘটনার পর চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তার সন্ধানে তল্লাশি চলছে। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকাল পর্যন্ত উদ্ধার ও অগ্নিনির্বাপণ অভিযান অব্যাহত ছিল।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নায়ডু এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সরকারি সফরে তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পোস্টে চন্দ্রবাবু নায়ডু লিখেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুলে বাসে আগুন লেগে মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
কেকে/ এমএস