উত্তরবঙ্গে উচ্চশিক্ষার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাল ইটের সাম্রাজ্য খ্যাত দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। কৃষি কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হওয়া এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালের পরিক্রমায় বহু পথ পাড়ি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নানা সময়ে নানা উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের প্রচেষ্টায় কম-বেশি উন্নয়নমূলক নানা কর্মকাণ্ড হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভুত্থানের পর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান পদত্যাগ করলে একই বছরের ২৩ অক্টোবর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্ল্যা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের ১ বছর হয়ে গেল। এরই মধ্যে মো. এনামউল্ল্যার হাত ধরে হাবিপ্রবিতে বেশকিছু উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
নারী শিক্ষার্থীদের হলের প্রাচীর নির্মাণ:
বিগত সময়ে বেগম রোকেয়া হল (পূর্ব নাম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) ও নবাব ফয়জুন্নেছা হলের (পূর্ব নাম আইভি রহমান হল) সামনের অংশে কোনো দেয়াল ছিল না। তারকাঁটার নামমাত্র বেড়া ছিল। যাতে হল দুটি সম্পূর্ণ অনিরাপদ ছিল। উপাচার্য এক অনুষ্ঠানে ছাত্রীদের হল দুটির নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে সামনের অংশে প্রাচীর নির্মাণের ঘোষণা দেন এবং যার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এতে করে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। যাতে হল দুটির শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
টিএসসির আধুনিকায়ন:
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স-স্টুডেন্টস সেন্টারের (টিএসসি) আধুনিকায়ন হয়েছে। টিএসসিতে পূর্বে পর্যাপ্ত টেবিল, চেয়ার ছিল না। কুকুরের আনাগোনা ছিল অতিপরিচিত। টিএসসিটি বর্তমানে একটি আধুনিক টিএসসি। সেখানে এসি স্থাপন করা হয়েছে। যেন শিক্ষার্থীদের গরমে কষ্ট না করতে হয়। সেই সঙ্গে উন্নতমানের টেবিল দেওয়া হয়েছে এবং পর্যাপ্ত চেয়ার দেওয়ার কাজ চলছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর মো. এনামউল্ল্যা আধুনিকায়িত টিএসসির উদ্বোধন করেন। সেখানে সুপেয় পানির জন্য পানির ফিল্টারও স্থাপন করা হবে।
কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ:
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ছিল কাঁচা। যেগুলো এখন পাকা হয়ে যাচ্ছে। কৃষি অনুষদের সামনে হতে নুর হোসেন হলের ডি বক্স, হাবিপ্রবি বাসস্ট্যান্ড হতে মসজিদ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের কাজ প্রায় শেষের পথে। ভিআইপি গেস্ট হাউজ সংলগ্ন রাস্তা হতে বেগম রোকেয়া হলের রাস্তা নষ্ট হওয়ায় পুনরায় রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ চলছে। কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের কাজ শেষ হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের রাস্তা চলাচলের কষ্ট কমে যাবে। বৃষ্টির দিনে কাঁচা রাস্তায় সকলকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়।
নুর হোসেন হলের সংস্কার:
নুর হোসেন হলের দরজা, জানালা পুরাতন হওয়ায় বহু দরজা-জানালা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন দরজা- জানালা লাগানো হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় জায়গাগুলোতে গ্রিল লাগানো হচ্ছে। হলটিতে ডাইনিং রুমেরও সংস্কার কাজ চলছে। বৈদ্যুতিক সার্কিট ও সুইচ পরিবর্তন করা হয়েছে। পয়ঃনিস্কাশন সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। নতুন করে প্যান বসানো হয়েছে। পানির লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন মেরামত করা হয়েছে। নতুন করে পুরো হল রঙের কাজ চলছে; যেগুলো প্রায় শেষের দিকে। কাজগুলো শেষ হলে হলের শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমবে। ওযুখানার সংস্কার এবং জায়গা বৃদ্ধি ও রিডিং রুম তৈরির পরিকল্পনা করেছেন হল সুপার।
খেলার মাঠ সংস্কার:
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজয়-২৪ হল এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের খেলার মাঠ সংস্কারের কাজ চলছে। বিজয়-২৪ হলের মাঠটি আন্তর্জাতিক মানের করা হবে। সেখানে পিচ ও আউটফিল্ডের কাজ চলছে। নানা রকমের মাটি ফেলা হয়েছে এবং শ্রমিকরা সেখানে মাঠ সমানের কাজ করছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের মাঠটি অনুশীলনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেখানে খেলোয়াড়েরা নিজেদের ঝালিয়ে নিতে খেলাধুলা করবেন।
লাইব্রেরির এসি সম্প্রসারণ:
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পূর্বে শুধু দ্বিতীয় তলার একটি অংশ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছিল। পরবর্তী শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে তৃতীয় তলা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।
স্মার্ট বোড স্থাপন:
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের শ্রেণিকক্ষে স্মার্ট বোড স্থাপন করা হয়েছে। স্মার্ট বোড স্থাপনের ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। সেখানে তারা ক্লাস, প্রেজেন্টেশন ও প্রয়োজন অনুযায়ী ভিজুয়াল ক্লাসগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। এতে করে অনুষদটির শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দিত।
এসব উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ দিবস উপলক্ষে দুই বার বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেছিলো। যেটি বিগত দিনে অনুষ্ঠিত হয়নি। এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন হাতে নিয়েছেন। এ আয়োজন আগামী ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিষ্ঠার পর মাত্র একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এরপর দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও কোনো সমবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। তবে, বর্তমান প্রশাসন গঠনের এক বছরের মধ্যেই তারা সমার্বতন আয়োজনের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে, এমন উন্নয়নমূলক ও ইতিবাচক কার্যক্রমের মাঝেও বেশকিছু সমস্যা রয়েই গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ওয়াশরুম নোংরা থাকে, ওয়াটার লাইন নষ্ট, ওয়াশরুমে পর্যাপ্ত পানির পাত্র নেই, হলগুলোতে ডাইনিংয়ে খাবারের দাম বেশি এবং মানের দিকেও যথেষ্ট ঘাটতির কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রয়েছে পরিবহন ঘাটতি। সেইসাথে রয়েছে আবাসন সঙ্কটও। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক কর্মকাণ্ডকে যেমন সাধুবাদ জানিয়েছেন, তেমনি সমস্যাগুলোরও সমাধান চেয়েছেন।
বেগম রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কৃষি অনুষদ ১৯ ব্যাচের সুস্মিতা আওয়াল উর্মি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে কাজ করছে, তা প্রশংসনীয়। উপাচার্য স্যার বেশ ভালো উন্নয়ন করছেন এবং দিন দিন তিনি আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করছেন। দৃশ্যমান উন্নয়নগুলোর বাহিরে আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট রয়েছে। আমি তৃতীয় বর্ষে গিয়ে হলের সিট বরাদ্দ পেয়েছি। যদি এটি প্রথম বর্ষ বা দ্বিতীয় বর্ষেই সম্ভব হত, তাহলে ভালো হতো। বহু গরীব শিক্ষার্থী আছে, যাদেরকে বাড়তি টাকা খরচ করে বাহিরে মেসে থাকতে হয়। যেখানে নিরাপত্তাও সে অর্থে নিশ্চিত হয় না। প্রত্যাশা থাকবে- উপাচার্য স্যারের হাত ধরে হলগুলোর সম্প্রসারণ হবে কিংবা নতুন হল নির্মাণের উদ্যেগ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যারা গবেষণার কাজ করি, তাদেরকেই প্রাথমিক খরচগুলো বহন করতে হয়। সকলের পক্ষে খরচ বহন করা সম্ভব হয় না, সে কারণে তারা গবেষণা করে না। সেইজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রধান লক্ষ্য গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞান উৎপাদন, বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ- সেটি সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে- তারা যেন গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ান, যেন শিক্ষার্থীরা গবেষণায় আগ্রহী হয় এবং সত্যিকারের পড়ালেখা করতে পারে।’
মার্কেটিং বিভাগ ২০ ব্যাচের বেগম রোকেয়া হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী তাজনুর সরকার তনু বলেন, ‘আগে তো সেভাবে কাজ হতো না। ২০২৫ সাল থেকে বহু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। আমাদের হলের প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে। হলের রুমে ফ্যান নষ্ট হলে কিংবা কোনো ইলেক্ট্রনিক সমস্যা হলে মামাদের বললেই যেকোনো মুহুর্তে ঠিক করে দিয়ে যাচ্ছে। পুরাতন সুইচ বোডগুলো পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমাদের হলের পুরাতন ভবন আগে অনেক স্যাঁতস্যাঁতে ছিল, এখন সেটি রং করেছে। দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে। রাস্তার উন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমানে বেশ ভালো কাজ হচ্ছে। প্রত্যাশা থাকবে বর্তমান প্রশাসন যেন ধারাবাহিক উন্নয়ন বজায় রাখে।’
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মনোয়ার মোর্শেদ মুন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেশ সামগ্রিক উন্নতি হচ্ছে। আমাদের ফ্যাকাল্টিতে স্মার্ট বোড স্থাপন করা হয়েছে। এ ফলে আর প্রজেক্টরের ওপর নির্ভর করতে হবে না। ক্লাস, প্রেজেন্টেশনের কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে। তবে, এক্ষেত্রে স্মার্ট বোড কিভাবে অপারেট করতে হয়, তার সেশন নিলে সবাই ঠিক মতো অপারেট করতে পারতো; যাতে করে শতভাগ উপযোগিতা নিশ্চিত হতো।’
কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ফ্যাকাল্টির ওয়াশরুমের পানির লাইনগুলো অর্ধেক নষ্ট, বেসিন নষ্ট, পর্যাপ্ত পানির পাত্র নেই। ওয়াশরুম অপরিস্কার হওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই সমস্যাগুলোর সমাধান হলে গুণগত মানের শিক্ষা কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।’
বিজয়-২৪ হলের শিক্ষার্থী নাফছির ইসলাম কাব্য বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসনের উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করতেই হয়। আমাদের হল মাঠের সংস্কার হচ্ছে। সংস্কার সম্পন্ন হলে আমরা নিয়মিত সেখানে খেলাধুলা করতে পারবো। আমাদের শারীরিক কসরত হবে। আহ্বান থাকবে- যেন দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ হয়। আমাদের হলের রিডিং রুম অনেক ছোট। আবার চার তলার ছাঁদ দিয়ে পানি পড়ে। অবশ্য হল সুপার স্যারের সাথে কথা বলেছি। তিনি ছাঁদ মেরামত ও রিডিং রুম বর্ধিতকরণের আশ্বাস দিয়েছেন।’
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. বাপ্পি মিয়া বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেশকিছু উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। টিএসসির আধুনিকায়ন, লাইব্রেরির এসির সংখ্যা বাড়ানো, কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, খেলার মাঠ সংস্কার। এমন সামগ্রিক উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করতেই হয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটবে- এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ, এখানে শিক্ষা, গবেষণা ও দাপ্তরিক কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে নিয়মিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসবাস করছে, চলাফেরা করছে এবং শিক্ষা, গবেষণা ও দাপ্তরিক কাজে অংশ নিচ্ছে। প্রত্যাশা থাকবে- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন উন্নয়নমূলক কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে এবং দিন দিন ঈর্ষণীয় উন্নয়ন উপহার দেন। তবে, এত উন্নয়নের মাঝে কিছু সমস্যাও রয়েছে। হলগুলোতে খাবারের দাম বেশি। মানের দিক দিয়ে খুব একটা ভালো না। আবার প্রতিদিন মাছ, মুরগি আর একই জাতীয় সবজি খেতে হচ্ছে। খাবারে কোনো বৈচিত্র্য নেই। আবার হলগুলো বেশ নোংরা থাকে। আর মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা তো রয়েছেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে- তারা যেন ডাইনিংয়ে ভর্তুকি দিয়ে কম টাকায় বৈচিত্র্যময় সুষম খাবারের ব্যবস্থা করেন এবং হল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করেন।’
টিএসসি আধুনিকায়নের অনুষ্ঠানে মো. এনামউল্ল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া আধুনিকায়নের প্রয়াস ব্যক্ত করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি একটা ভালো ক্যাফেটেরিয়ায় বসে খাবারই না খেতে পারে, তাহলে বিষয়টি দুঃখজনক। আমার ইচ্ছে আছে, শিক্ষার্থীদের একটি আধুনিক মানের ক্যাফেটেরিয়া উপহার দেওয়া। যেখানে শিক্ষার্থীরা শান্তি মতো বসে খাবার খেতে পারবে। তারা যদি ঠিকমতো খাবারই খেতে না পারে তাহলে তারা ক্লাস, পরীক্ষায় ঠিকমতো অংশগ্রহণ করবে কিভাবে?’
নুর হোসেন হলের সুপার প্রফেসর ড. মো. হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ‘আমাদের নুর হোসেন হলটি পুরাতন একটি হল। বৈদ্যুতিক লাইনগুলোর সমস্যা ছিল। কিছু দিন আগে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছিল। আমরা বৈদ্যুতিক সার্কিট, সুইচগুলো পরিবর্তন করেছি। প্রায় ৫০টির মতো রুমের দরজা-জানালা মেরামত করেছি। শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত গ্রিল লাগানো হয়েছে। হলটির অনেক টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গিয়েছিল। তাই প্যানগুলো পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।’
‘জিআই পাইপগুলো পুরনো হওয়ায় পানির লাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল। মলগুলো নির্দিষ্ট জায়গার পরিবর্তে বাহিরে বের হয়ে থাকতো। সেই পয়ঃনিস্কাশন সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। ডাইনিং চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার চলছে; যা প্রায় শেষের দিকে। পুরো হলটি রংয়ের কাজ চলছে। অনেক রুমের ফ্যান ছিল না, সেই রুমগুলোতে ফ্যান দেওয়া হয়েছে। ওযুখানার সংস্কার ও জায়গা বৃদ্ধির চিন্তা আছে। সেইসাথে রিডিং রুম তৈরিরও চিন্তা করেছি; যা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হলটির ছাদের অবস্থা ভালো না। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের থেকে বাজেট নিয়ে জল ছাঁদ সংস্কার করা হবে।’
কেকে/ এমএ