নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কিন্তু আপনারা এ দেশের নাগরিক হিসেবে ভোটার হতে পারেননি। শুধু তাই নয়, মানুষের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার সবকিছুই হরণ করেছে শেখ হাসিনা।’
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ছয় নম্বর ওয়ার্ডে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রচারণায় ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাড়ে ৩০০ পরিবারের মাঝে মশারি বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে মামুন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আপনারা যখন এ দেশে কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিলেন না, তখন ২০০৩ সালে আমি উপলব্ধি করি। খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলো, সেই সময়ে হাইকোর্টে আপনাদের ব্যাপারে একটি রিট হয়েছিল। একজন রিট করেছিলেন আপনারা ভোটার হতে পারবেন কি পারবেন না। আর সেই দিনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন আমি এখানে আপনাদের অনেকের সাথে কাজ করে আপনাদেরকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য অনেককে আমি ভোটার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তৎকালীন অনেকে যারা ভোটার হয়েছে এবং আদমজী এম ডাব্লিউ স্কুলে যখন দায়িত্বে ছিল, তাদের সাথে কথা বলেছি। তখন ৫ নম্বার ওয়ার্ড, ৬ নম্বার ওয়ার্ড ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড সুমিল পাড়াতে আপনাদের মধ্যে দুইটা ভাগ ছিল। যাতে আপনারা ভোটার হতে না পারেন।’
৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিহারী ক্যাম্পের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সদস্য অকিল উদ্দিন ভুইয়া, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, যুবদল নেতা ওয়াসিম আসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুলসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মশারি বিতরণ শেষে নেতাকর্মীরা আদমজী এলাকায় ৩১ দফার প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ করেন।
এ সময় মামুন মাহমুদ বলেন, ‘আমি চিন্তা করেছি, তখন আমাদের সাথে আপনাদেরকে ভাই ভাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করতে হবে। সেই চিন্তা থেকে আমি বলেছি, প্রথমত তাদেরকে ভোটার করতে হবে। ভোটার হলে তারা বাংলাদেশের হিসাবে বিবেচিত হবে। তারা তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে স্কুল কলেজে পড়াতে সুযোগ-সুবিধা পাবে, তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে আমাদের ছেলে-মেয়েদের সাথে বিবাহ সাদি দিতে পারবে এবং একসাথে মিলেমিশে বসবাস করতে পারবে। তারা রাজনীতিও করতে পারবে, কাউন্সিলর হতে পারবে, এমপি হতে পারবে এবং মন্ত্রীও হতে পারবে। তারা যদি ভোটার হতে না পারত, তাহলে এই ২০ হাজার লোক অন্ধকারেই থেকে যেত।’
বিহারী ক্যাম্পের মানুষদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের এখানে অনেকে স্বামী সন্তান ও বাবা মা সবাইকে হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু পাকিস্তান যেতে পারেন নাই। পাকিস্তানে আপনাদের প্রত্যাবর্তন হয়নি, কারণ তারা আপনাদেরকে ফেরত নেয়নি। আমি চিন্তা-ভাবনা করেই আপনাদের এই এলাকার ভোটার করে দিয়েছি। বর্তমানে আপনাদের এই ক্যাম্পে সাত হাজারেরও অধিক ভোটার আপনারা হয়েছেন। সুতরাং, আপনাদের মর্যাদা ও সম্মান বেড়েছে, আপনারা মূলধারার সাথে এই জাতির সাথে মিলেমিশে বসবাস করা সুযোগ পেয়েছেন।’
‘তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন- রাষ্ট্রকে নতুন করে সংস্কার করার জন্য। কারণ, গত ১৫ বছরে খুনি শেখ হাসিনা সরকার রাষ্ট্রকে কি করেছে, তা আপনারা জানেন। এই রাষ্ট্র জায়গায় জায়গায় তারা ধ্বংস করেছে। শাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ ব্যবস্থা থেকে আইনের শাসন নেই। দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। শুধু তাই না, দেশে মাদকের সূত্রপাত ঘটিয়েছে খুনি স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। এই এলাকায় আগে এত মাদক ব্যবসায় ছিল না। এসব হাসিনা এ দেশে এনেছে এবং মানুষের চরিত্র নষ্ট করেছে।’
কেকে/ এমএ