সাভারের আশুলিয়ায় নারী ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা এবং নার্সদের অবহেলার কারণে মিনহাজ নামে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির পরিবার। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিশুটির মৃত্যু হতে পারে গলায় খাবার আটকে যাওয়ার কারণে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. হাবীবুর রহমান।
শিশু মিনহাজ আশুলিয়ার জামগড়া কাঠালতলা এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলামের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে হালকা জ্বর ও কাশি নিয়ে শিশুটিকে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি করানোর পরপরই মিনহাজকে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
শিশুটির মা অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলেকে একটা ইনজেকশন দেওয়ার পরই তার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আমি নার্সদের ডাকলেও তারা সময়মতো আসেনি। একপর্যায়ে তারা বলে, ‘কিছু না, ঠিক হয়ে যাবে।’ কিন্তু কিছুক্ষণ পরই আমার ছেলে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর প্রায় কয়েক ঘন্টা আমার বাচ্চা কোথায় আছে তাও বলেনি পরে খুঁজে বের করে দেখি বাচ্চা মৃত।”
পরিবারের অভিযোগ, ইনজেকশন দেওয়ার আগে কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা ওষুধের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
শিশুটির চাচা বাঁধন ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ডেঙ্গু পজেটিভ নিয়ে তার ভাতিজা মিনহাজকে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সাড়ে ১২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আমরা তার লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাণীশৈংকল যাচ্ছি। সেখানেই দাফন করা হবে বলেই ফোনটি কেটে দেন তিনি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক হাবীবুর রহমান বলেন, শিশুটিকে সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। পরে এখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর ভালোর দিকেই ছিল। সম্ভবত শিশুটিকে কোন খাবার খাওয়ানো হয়েছিল যা খাদ্য নালীতে আটকে যায় এবং পরে তার মৃত্যু হয়।
শিশুটিকে কেন ২/৩ ঘন্টা অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা প্রশ্নই আসেনা। একটা মৃত বাচ্চাকে আর ওয়ার্ডে রাখা যায় না। তাই মারা গেলে যেখানে লাশ রাখা হয় সেখানেই রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হান্নানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে এই ঘটনায় প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
কেকে/ আরআই