কড়া নিরাপত্তা আর ধর্মীয় উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন। বিজয়া দশমীর দিনে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শুরু হয় এ বর্ণাঢ্য আয়োজন। সৈকতের বালুচরে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্ত ও পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
দুপুর ২টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও বিপুল সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও দর্শনার্থীরা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হন।
জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের প্রতিমা ট্রাকে করে সৈকতে আনা হয়। এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকেও প্রতিমা আনা হয়েছে। অন্যদিকে চকরিয়া ও পেকুয়ার প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয়েছে মাতামুহুরী নদীতে। এবারের আয়োজনে সৈকতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ২৫০টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
বিকেল ৫টায় মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে সাগরে প্রতিমাগুলো বির্সজন দেওয়ার কথা জানিয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু জানান, প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বৃহৎ এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, দূর-দূরান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আজকের এই বিশেষ দিনে এখানে এসে জড়ো হয়েছেন। আশা করছি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আজকের আয়োজন শেষ হবে।
সকাল থেকেই সৈকত এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়। জরুরি সহায়তায় ছিল জেলা প্রশাসনের সমন্বিত কন্ট্রোল রুম।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান জানান, তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদারের মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান সফল করতে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। পাশাপাশি আগত পর্যটকদের ভ্রমণ যেন সুন্দর ও নির্বিঘ্ন করা যায় সেক্ষেত্রেও প্রশাসন তৎপর ছিল।
পরিবার নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে এসেছেন স্কুলশিক্ষক রাজেন্দ্র রায়। তিনি বলেন, কক্সবাজারের আয়োজনটাই সারাদেশে বড়। তাই এখানে ছুটে এসেছি মাকে বিদায় দিতে। প্রশাসন খুব ভালো কাজ করছে। তারা পর্যটকদের সহযোগিতা করছে।
এদিকে চারদিনের টানা ছুটি ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আগামী কয়েক দিন কক্সবাজারে ৫ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। কোনো হোটেল খালি নেই বলে জানিয়েছে হোটেল মালিক ব্যবসায়ী সমিতি।
কেকে/ আরআই