জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর ভাটারা থানার এক হত্যা মামলায় বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুজহাত সারওয়াত তমাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মামলায় ৩৬ নম্বর আসামি সংস্কারবাদী দলের এই নেত্রী। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আদেশের বিষয়টি জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই নাজমুল আমিন।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত আসামি নুজহাত সারওয়াত তমা মহিলা লীগের সদস্য ছিলেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দলে যোগ দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদ পান। দলের মহাসচিব তহিদুল ইসলাম নুজহাত সারওয়াত তমার স্বামী। দলটির মহাসচিব তহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিতে জুলাই-আগস্টের একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তহিদুল ইসলাম ২০২১ সালে জাল টাকাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়েন। ওই বছরের ৪ জুলাই পল্লবী থানার মামলা নম্বর:০৮। মামলায় ১ বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর জামিনে পলাতক হন তহিদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী দলটি নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক বাছাই তালিকায় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্প্রীতি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যে ২২টি দলের তালিকা করে সেখানে সংস্কারবাদী দলটি ৪ নম্বরে রয়েছে।
গণহত্যা মামলার পলাতক আসামি তহিদুল ইসলাম তার বাবা নুরুল হককে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান করে দলের নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করেন।
নিষেধাজ্ঞার অন্যান্য আসামিরা হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আওয়াল, পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কৃষ্ণ কুমার সরকার, মিরপুর যুবলীগের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম, শেরেবাংলা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বশির আহমেদ, শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো. আফতাব উদ্দিন, শেরেবাংলা নগর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি দ্বীন চৌধুরী ওরফে দ্বীন ইসলাম।
ভাটারা থানার এসআই নাজমুল আমিন জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় হত্যা মামলা হয়। যার মামলা নম্বর ৪৫। এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ভাটারা এলাকায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য আসামিরা দাঙ্গা তৈরি করে। আওয়ামী লীগের অর্থের যোগানদাতাদের মদতে অন্য আসামিরা অস্ত্র, গোলাবারুদ, লাঠিসোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে তারা একাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। আসামিরা হামলা চালিয়ে সেখানে মো. জাহাঙ্গীর নামে একজনকে হত্যা করেন। জাহাঙ্গীরের বাড়ি পাবনার পাড় চিথলিয়া গ্রামে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল আমিন বলেন, আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন এই আশঙ্কায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ আরআই