গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন গ্রামে ড্রাগন ফল চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি আধুনিক কৃষি ও লাভজনক ফল উৎপাদনে বিশ্বাসী রুহুল আমিন ২০২০ সালে বামনখোলা গ্রামে মাত্র ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগান বিস্তৃত হয়েছে ৪ বিঘা জমিতে। এছাড়া তিনি বাগানের আয়ে ৫ বিঘা জমি কিনেছেন।
বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ১ হাজার ২০০ কংক্রিটের খুঁটির সারিতে সারিতে ড্রাগন গাছ বেড়ে উঠেছে। প্রতিটি খুঁটিতে চারটি করে গাছ লাগানো হয়েছে। পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটিগুলোর গায়ে পেঁচিয়ে থাকা শাখাগুলোতে ঝুলছে কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ড্রাগন ফল। তার দুই ছেলে— একজন এমবিবিএস কোচিং ও অন্যজন এসএসসি পাস করা— বাগানে সহায়তা করে। নিয়মিত দুইজন কেয়ারটেকার বাগান তদারকি করেন।
প্রতিনিয়ত ১৫-২০ দিন পরপর প্রায় এক টন ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফলনের সময় দাম তুলনামূলক কম (প্রতি কেজি ১৫০-১৮০ টাকা) তবে শীতকালে ফলন কমে গিয়ে দাম বেড়ে যায় (২৫০-৪০০ টাকা)। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করেছেন।
রুহুল আমিন বলেন, ‘ইউটিউব দেখে শখের বশে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। শুরুতে আড়াই লাখ টাকা বিনিয়োগ করলেও বর্তমানে বাগানে প্রায় ২০ লাখ টাকার গাছ রয়েছে। শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হন, তাহলে ড্রাগন ফল চাষ থেকে মোটা অংকের আয় সম্ভব।’
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, রুহুল আমিনের বাগান নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার কম, জৈব সার বেশি লাগে। রুহুল আমিনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আউলিয়া খাতুন বলেন, ‘কাপাসিয়ায় বৃহত্তর পরিসরে ড্রাগন ফল চাষ হয়েছে। ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত ফল— বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কার্যকর। কৃষকরা এই চাষে লাভবান হবেন বলে আমরা আশাবাদী।’
স্থানীয় কৃষকরা মনে করছেন, রুহুল আমিনের এই সাফল্য গ্রামীণ অর্থনীতিকে নতুন পথ দেখাবে এবং তরুণদের মধ্যে কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ বাড়াবে।
কেকে/এমএ