কুমিল্লায় গোমতী নদীর চর এখন যেন শসার রাজ্য। উর্বর চরাঞ্চলে শীতের শুরুতে শসা চাষ শুরু হলে কৃষকদের মাঝে নেমে আসে উৎসবের আমেজ। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয় এখানকার শসা।
দেবিদ্বারের বারেরার চর ও বালিবাড়ি এলাকায় প্রায় ৫০ বছর ধরে শসা চাষ হয়ে আসছে। এখন এটি স্থানীয় কৃষক-কৃষাণীদের ঐতিহ্যের অংশ। এদিকে এবছরও গোমতী নদীর চরে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর তীরবর্তী চরে শসার সবুজ জমি। কেউ শসা তুলছেন। কেউ স্প্রে করছেন আবার কেউ শসা গাছ পরিচর্যা করছেন। নদীর চরের ঢালে এখানে-সেখানে শসার স্তূপ। ওজন শেষে পিকআপ ভ্যানে শসা তুলে দিচ্ছেন কৃষকরা। তাদের সহযোগিতা করছেন কৃষাণীরাও। শসা ক্ষেতের মাচায় ৩-৫ কেজি ওজনের সাথে ঝুলতে দেখা যায় বীজের হলুদ রঙের ৮-১০ কেজি ওজনের শসাও। এ বছর খুচরা ও পাইকারি বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০–৬০ টাকায়।
জানা গেছে, নদীর পলিমাটির উর্বরতা এখানকার চাষাবাদকে পরিণত করেছে কৃষির স্বর্ণক্ষেত্রে। শীতের কুয়াশা ভেদ করে ভোরেই মাঠে নামেন কৃষকেরা—সবুজ জমি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
বালিবাড়ির কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, “আমাদের নদীর চরের শসা খেতে খুবই সু-স্বাদু। এজন্য গোমতী নদীর চরের শসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শীতের মৌসুমে আমাদের এলাকায় ঘরে ঘরে শসা চাষ হয়।”
বারেরাচরের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, “আমাদের বাপদাদারা এই নদীর চরে করত। তাদের পর এখন আমরা চাষ করছি এখানে।”
স্থানীয় পশু চিকিৎসক হালিম সরকার জানান, “গোমতী নদীর চরের শসা খুবই সুস্বাদু। এজন্য এ শসার চাহিদা ব্যাপক। এই নদীর চরের শসা দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি করা হয়। আগে বিদেশেও রপ্তানি করা হতো।”
দেবিদ্বার উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ টি এম রাশেদুজ্জামান সরকার বলেন, “গোমতী নদীর চরের শসা শীতের প্রথমে চাষ হয়। এবং মাঝামাঝি সময় শেষ হয়। এই নদীর চরে শসার গুনগতমন ভালো। এজন্য এই চরের শসার চাহিদা বেশি।”
কেকে/ আরআই