নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নবনির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যেই ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। মসজিদটি চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে—মসজিদের ছয়টি এসির মধ্যে চারটি বন্ধ, সুইচবোর্ডে পানি ঢুকে উত্তর পাশের লাইন অকেজো, সিসি ক্যামেরা ও ফায়ার অ্যালার্ম নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া প্রধান ফটকের গেট বিকল, জানালা দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ছে মসজিদটিতে। একইসাথে টয়লেটের পাইপ চুইয়ে পানি পড়াতে নিচতলার সিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মসজিদের চার পাশের দেয়ালে ছোট-বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় মুসল্লি অধ্যাপক আব্দুর রব বলেন, নামাজের সময় এসি কাজ করে না, ছাদ থেকে পানি পড়ে। এমন অবস্থা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
রেসমা খাতুন নামে আরেকজন বলেন, নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত ক্যামেরা ও গেটও অকেজো। এছাড়া গত সোমবার সন্ধ্যায় মসজিদের ওয়াশরুমের কিছু সামগ্রী চুরির ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার মাকছুদুর রহমান জানিয়েছেন, ত্রুটিগুলো উল্লেখ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
এ বিষয়ে মসজিদটির সভাপতি (ইউএনও) মারুফ আফজাল রাজন বলেন, ত্রুটি যাচাই করা হচ্ছে। গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে এসব সমস্যা গুলো দ্রুত সমাধান করা হবে বলেও আশা করেন তিনি।
অন্যদিকে মসজিদটির নির্মাণকাজ করা মিম ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সত্ত্বাধিকারী তারেক হোসেন জানান, কাজটি তার প্রতিষ্ঠানটি পেলেও প্রকৃত কাজ মাঠে সম্পন্ন করেছেন সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলসহ ঘনিষ্ঠজনরা। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কাজের বিলও তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদটির কাজে বিভিন্ন সাপ্লায়ার প্রায় ৩১ লাখ ৮১ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে বলেও দাবি করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, অবকাঠামোগত ফাটল ও পানি প্রবেশ—এই ঝুঁকি আগে সমাধান করতে হবে। এরপর বৈদ্যুতিক ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম দ্রুত সচল করতে হবে। তাদের দাবি, দায়িত্ব নির্ধারণ করে দ্রুত টেকনিক্যাল অডিট ও সংস্কার করা প্রয়োজন। এদিকে উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যেই এভাবে ভঙ্গুরতা ও অনিয়ম প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।
কেকে/ আরআই