বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
অভিযোগপত্রে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমানকেও আসামি করা হয়েছে। তারা হত্যা মামলাটির এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন।
পিবিআই পরিদর্শক আলমগীর হোসাইন মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকালে নারায়ণগঞ্জের আমলী আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
তিনি বলেন, গত বছরের ২১ জুলাই বিকালে আন্দোলন চলাকালীন সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আব্দুল লতিফ নামে ৪০ বছর বয়সী রিকশা চালক। পরে তার বাবা মো. নেজাবুদ্দিন ৯ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
“অভিযোগপত্রে এজাহারনামীয় ১২ জন আসামির পাশাপাশি আরো দু’জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন আসামি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, অপর দুই মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ বাকিরা পলাতক।”
আব্দুল লতিফ হত্যা মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর। তবে, অভিযোগপত্রের বিষয়টি বুধবার আদালতে উপস্থাপন করা হবে জানিয়ে পুলিশ পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, “বিচারকের সামনে চার্জশিট উপস্থাপনের পর আদালত শুনানির দিন ধার্য করবেন।”
অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, সাবেক কাউন্সিলর ওমর ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জের আশরাফ, ইয়াসিন আরাফাত রাসেল, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে আবুল। তারা সকলেই সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী বলে পরিচিত।
তাদের মধ্যে ওমর ফারুক ও শাহজালাল বাদল এজাহারনামীয় আসামি না হলেও তদন্তে ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়াতে তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান কাইউম খান।
এ মামলায় মতিউর রহমান ও ইয়াসিন আরাফাত রাসেল কারাগারে বন্দি আছেন বলেও জানান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় অর্ধশতাধিক মামলা হলেও এই প্রথম কোনো মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
কেকে/এআর