চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ শূন্য থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম। সড়ক মেরামত, ড্রেন নির্মাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে তদারকি না হওয়ায় গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী না থাকায় চলমান ও নতুন প্রকল্পগুলোতে অব্যবস্থাপনা, বিলম্ব এবং অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের জুনের শেষাংশে নির্বাহী প্রকৌশলীর বদলি হওয়ায় পদটি শূন্য রয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত একাধিকবার বিভাগীয় অফিসে নিয়োগের জন্য চিঠি পাঠানো হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে প্রতিদিনের রুটিন কাজ থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
প্রকৌশলী না থাকায় নতুন প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন, বাজেট তৈরি, দরপত্র মূল্যায়ন ও কাজের গুণগতমান যাচাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো অনিয়মিতভাবে চলছে। চলমান সড়ক সংস্কার, ড্রেনেজ উন্নয়ন ও বাজার অবকাঠামো নির্মাণে তদারকির অভাবে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে করে প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি ও সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নাজিরহাট পৌরসভার বাসিন্দা এস এম আক্কাছ বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কর দিচ্ছি, কিন্তু তার বিনিময়ে মানসম্মত সেবা পাচ্ছি না। রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রকৌশলী থাকলে অন্তত কাজের মান ভালোভাবে যাচাই হতো।
পৌরসভার অন্য এক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক সংস্কার হলেও আরও বেশ কয়েকটি সড়ক ইতোমধ্যে খানাখন্দে ভরে গেছে। কাজের সময় কোনো প্রকৌশলীকে তদারকি করতে দেখিনি।’
সচেতন মহলের দাবী, দ্রুত নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়োগ না হলে পৌরসভার উন্নয়ন কার্যক্রম আরও দীর্ঘ সময় পিছিয়ে যাবে এবং ইতোমধ্যেই শুরু হওয়া প্রকল্পগুলো ঝুঁকির মুখে পড়বে। একইসঙ্গে অবকাঠামোর নিম্নমান ও অর্থ অপচয়ের প্রবণতাও বাড়বে। তাই নাগরিকরা অবিলম্বে পদ পূরণের দাবি জানিয়েছেন।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকৌশলী ছাড়া উন্নয়ন কার্যক্রম সচল রাখা কঠিন। নকশা, বাজেট, দরপত্র অনুমোদন থেকে শুরু করে প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে দক্ষ প্রকৌশলীর ভূমিকা অপরিহার্য। বর্তমানে আমরা চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। শিগগিরই পদায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’
কেকে/এজে