দেশের টেলিভিশন গ্রাফিক্স ও ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র দেবাশীষ দাস এবার অর্জন করলেন ‘দক্ষিণ এশিয়া স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫। ‘সৃজনশীল ব্র্যান্ডিংয়ে আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব’ ক্যাটাগরিতে তাকে এই সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে।
এই গৌরবময় অনুষ্ঠানটি শনিবার (২ আগস্ট) বিকাল ৩টায় ঢাকা সেগুনবাগিচার কচি-কাঁচা মিলনায়তনে আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সাউথ এশিয়া সাহিত্য পরিষদ, যার মূল বার্তা ছিল ‘সাহিত্য হোক সার্বজনীন’।
প্রধান অতিথি ছিলেন প্রেসক্লাব ক্লাব লিমিটেডের ডিরেক্টর ও ইন্সপিরিয়াম গ্লোবালিটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আরাফাতুর রহমান অ্যাপেল।
অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যেখানে ছিল আবৃত্তি, গান, নাচ, নাটিকাসহ নানা সৃজনশীল আয়োজন। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার ছিল গ্লোবাল ভয়েস ২৪, যারা অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারে ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই সম্মাননা প্রাপ্তির মাধ্যমে দেবাশীষ দাস তার পেশাগত জীবনের এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন। এর আগে তিনি স্টার বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এ ‘ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং লিডার অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে সম্মাননা পান, যা ডিজিটাল ব্র্যান্ডিংয়ে ও প্রোগ্রাম গ্রাফিক্সে তার সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
এছাড়া, গত ২৬ মে অনুষ্ঠিত এক্সিলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এ তিনি ভূষিত হন ‘সেরা মোশন গ্রাফিক্স আর্টিস্ট (প্রোগ্রাম ব্র্যান্ডিং)’ খেতাবে। সেই অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিরীন শীলা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান লায়ন মো. মুজিবুর রহমান। এ অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার ছিল একুশে টেলিভিশন।
২০২৪ সালে তিনি পেয়েছেন ‘বেস্ট ইন ব্র্যান্ডিং কমিউনিকেশন’ সম্মাননা, যা প্রদান করে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘লেজার ট্রটি’, ডিজিটাল মিডিয়া ও ব্র্যান্ডিংয়ে দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ।
দেবাশীষ দাস বর্তমানে মাছরাঙা টেলিভিশনের গ্রাফিক্স বিভাগের উপব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০১১ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থেকে দেশের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি নির্মাণে এনেছেন বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য। তার কাজের মধ্যে রঙের ভারসাম্য, মুভমেন্ট, সাউন্ড সিনক্রোনাইজেশন এবং টাইপোগ্রাফির নিখুঁত ব্যবহার আজও বাংলাদেশের টেলিভিশন ব্র্যান্ডিংয়ের এক মানদণ্ড।
শুধু ডিজাইনার নন, তিনি একজন প্রশিক্ষকও। তিনি ২০১৮ সাল থেকে পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে মোশন গ্রাফিক্স ফ্যাকাল্টি হিসেবে এবং ২০২২ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগে গেস্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে শিক্ষাদানে যুক্ত রয়েছেন।
তার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৭ সালে আরটিভিতে, এরপর যমুনা টেলিভিশনে কাজ করে ২০০৯–২০১১ পর্যন্ত নতুন ধারার মোশন গ্রাফিক্সের সূচনা করেন। পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশের বই প্রকাশনা শিল্পেও ভূমিকা রেখেছেন, দুই শতাধিক বইয়ের প্রচ্ছদ ডিজাইন করে।
দক্ষিণ এশিয়া স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ নিঃসন্দেহে দেবাশীষ দাসের সৃজনশীল যাত্রার এক উজ্জ্বল স্বীকৃতি, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
কেকে/এজে