শিশু হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিলেটের ওসমানীনগরে মহাসড়ক অবরোধ করেছে নিহতের পরিবার ও বিক্ষুব্ধ জনতা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকালে সাড়ে ৬টার দিকে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ ঘটনায় থানা পুলিশ হোটেল মালিক বুলবুলকে আটক করেছে। রবিউল ইসলাম নাঈয়ুম (১৪) নামের এক কিশোরের হত্যার ঘটনায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। তারা প্রায় ২ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিহত রবিউল ইসলাম নাইয়ুম (১৪) বিশ্বনাথ থানার আটঘর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে। সে তার নানা বাড়ি ওসমাননীগর উপজেলার গদিয়ারচর গ্রামে বসবাস করে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত রবিউল গোয়ালাবাজারের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ব্রাহ্মণগ্রাম সুপ্রিম ফিলিং স্টেশনের পাশে বগুড়া রেস্টুরেন্টে নাইট শিফটে কাজ করতো। রবিউলের পরিবারের অভিযোগ হোটেল মালিক বুলবুল আহমদ নাঈমের সাথে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করে তাকে হত্যা করেছে। নিহত রবিউল নিখোঁজ ছিলেন। তার লাশ কুলাউড়া থানা পুলিশ উদ্ধার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ কররে তার পরিবার লাশ সনাক্তত করেন এবং আইন প্রক্রিয়া শেষ করে নানার বাড়ি গদিয়ারচর গ্রামে নিয়ে আসেন।
নিহতের নানী বেলা বিবি জানান, আমার নাতি বুধবার বাড়িতে আসলে তার শরীরে জখম দেখতে পাই। তার কারণ জানতে চাইলে সে জানায় হোটেল মালিক বুলবুল তাকে জোরপূর্বক বলৎকার করেছে। রবিউল হোটেল থেকে তার কাপড় ও জিনিসপত্র আনতে গেলে আর ফিরে আসেনি। তার খোঁজ করতে গেলে তাকে হোটেলে পাওয়া যায়নি। হোটেল মালিক বুলবুলকে আমার নাতির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। পরে আমরা ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি কুলাউড়া থানায় তার লাশ রয়েছে। আমার নাতীকে নৃশংসহভাবে অত্যাচার করেছে। আমরা বুলবুলসহ এর সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। কুলাউড়া থানা মামলা নেয়নি। আমরা ওসমানীনগর থানায় মামলা নিতে বললে তারাও মামলা নিতে আপত্তি জানায়। পরে আমরা বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করি।
পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ নানা তালবাহানা শুরু করে। এর প্রতিবাদে গ্রামবাসী থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় রবিউলের ভাই বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করে বুলবুল আমার ভাইকে হত্যা করা করেছে। আমরা অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা দিয়েও মামলা করতে পারিনি। পুলিশ শুরু থেকেই টালবাহানা করছে। আমরা হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আশ্বাসে অবরোধ কর্মসূচি সন্ধ্যার দিকে প্রত্যাহার করে নেয় এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আনহার আহমদ বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেয়।
নিহত রবিউলের হত্যাকারীদের দ্রুত আটক করার দাবি জানাচ্ছি। রাতেই তার জানাযা শেষে তার নানার বাড়ি গদিয়ারচর গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. মোনায়েম মিয়া বলেন, মামলা না নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। ঘটনাটি কুলাউড়ায় ঘটনার কারণে এখানে মামলা নেওয়া যাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাথে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এআর