সরকারি বিধি উপেক্ষা করে নাটোরের লালপুরে এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিতভাবে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলনের অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষা প্রশাসনসহ স্থানীয় অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অভিযোগের রয়েছেন দুড়দুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখার শিক্ষক উত্তম কুমার মন্ডল চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে টানা প্রায় ৩ মাস ২১ দিন কোনো রকম ছুটি আবেদন ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন। অথচ তিনি নিয়মিতভাবে ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বেতন তুলেছেন।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষক উত্তম কুমার মণ্ডলের নামের পাশে স্কুলের হাজিরা খাতায় টানা অনুপস্থিতি উল্লেখ করা রয়েছে। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, স্যারকে অনেকদিন ধরে ক্লাস নিতে দেখিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তম কুমার মন্ডল বর্তমানে দু’টি গুরুতর মামলার আসামি। গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার কর্মকারের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি তিনি। ২০ মে গোঁসাই আশ্রমে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে গুলিবর্ষণের মামলায় ২ নম্বর আসামি। এ কারণেই তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তার অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাওয়া হলে উত্তম কুমার মন্ডল দাবি করেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু কোনো ধরনের ছুটির আবেদন বা মেডিকেল সনদ তিনি কর্তৃপক্ষকে দেননি। উল্টো সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
স্থানীয় অভিভাবকরা এ ঘটনায় দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষক যদি মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও সরকারি অর্থ গ্রহণ করেন, তা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার বলেন, উত্তম কুমার দীর্ঘদিন যাবত অনুপস্থিত। তাকে তিন দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো জবাব দেয়নি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াজেদ আলী মৃধা জানান, বর্তমানে ইএফটি’র মাধ্যমে বেতন বন্ধের সুবিধা চালু নেই। তবে আগস্ট থেকে এটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেকে/ এমএস