নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর ওপর দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী হাজীপুর এলাকার আল বারাকা হাসপাতাল সংলগ্ন কাজী অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আজ সকালে ভুক্তভোগী ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী অনিমেষ দেব নাথ অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ইইই বিভাগের এই শিক্ষার্থী এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি এবং তার দুই সহপাঠী গতকাল চট্টগ্রামের একে খান এলাকা থেকে বাঁধন প্লাস পরিবহনের একটি বাসে করে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় পৌর হাজীপুর এলাকায় পৌঁছালে বাসে পূর্ব থেকে অবস্থান করা তিনজন যাত্রীসহ অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা চালায়।
হামলাকারীরা অনিমেষের গলা চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে এবং তাকে ও তার দুই সহপাঠীকে কিল, ঘুসি ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। এতে অনিমেষের মাথা, কানের পাশে ও ডান বাহুতে গুরুতর জখম হয়। অপর শিক্ষার্থীদের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হামলাকারীরা অনিমেষের পকেট থেকে ৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মোবাইলে ছবি তুললে তা মুছে ফেলে ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহতদের বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানার পরেও হামলা চালাতে দ্বিধা করেনি। শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ধরনের হামলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং ক্যাম্পাসে ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে আজ বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তায় একটি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করবে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে নোবিপ্রবি প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগেও আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি।
বেগমগঞ্জ মডেল থানায় দায়েরকৃত উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
কেকে/এএম