তামাক নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দি ইউনিয়ন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র আয়োজনে এবং ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস এর সহায়তায় আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে হওয়া বৈশ্বিক এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম তুলে ধরে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী। তিনিসহ বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ জনের একটি প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
২২-২৫ জুন আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে এ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক, দাতা গোষ্ঠি, গণমাধ্যম ও সমাজ কর্মীদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। বিশ্বব্যাপী তামাকের নিরব মহামারী রোধে গবেষণা, উদ্ভাবনী কৌশল ও পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আলোকে আগামী দিনের তামাক নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়। একইসাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করেন। সম্মেলনে মাইকেল ব্লমবার্গ জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রতি দেন। সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী, কানাডার স্বাস্থ্য মন্ত্রী অংশ নেন। এছাড়াও ভাইটাল স্ট্রাটেজিস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিটিএফকেসহ বিশ্বের স্বনাধন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের গবেষণা তথ্য ও মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন।
সম্মেলনে অংশগ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় ড. অরূপরতন চৌধুরী জানিয়েছেন, “বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী তামাকের আগ্রাসনে বছরে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় তামাকের কারণে। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বের বিভিন্ন পেশার বিশষজ্ঞবৃন্দের সম্মেলনে অংশগ্রহণ ও মূল্যবান মতামত আগামী দিনের তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিভিন্ন পেপারে প্রতিনিধি দল তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন এবং অন্যান্য দেশের পরিস্থিতি, সাফল্য ও চ্যালেঞ্জগুলো থেকে দেশের জন্য শিক্ষা হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মকান্ডে সহায়ক হবে।”
উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ ৪০ বছরের অধিক সময় ধরে বেতার, টেলিভিশনে ধূমপান ও মাদক বিরোধী সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছেন অরূপরতন চৌধুরী। পত্রিকায় দুই শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশ এবং ধূমপান, মাদক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক ২৫টির বেশি বই প্রকাশ করেছেন। ১৯৮৯ সালে সামাজিক সংগঠন ‘মানস’ প্রতিষ্ঠান করেন। বাংলাদেশে একমাত্র তামাক, মাদক বিরোধী চলচ্চিত্র ‘স্বর্গ থেকে নরক’ নির্মাণ করেছেন তিনি। জনসচেতনতা ও সমাজ সেবায় তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার তার সামাজিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৫ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ প্রদান করে।
কেকে/এআর