ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের নতুন জেলখানা মোড় সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মহাসড়কের একটি লেন দখল করে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিনই সেখানে যুক্ত হচ্ছে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের বর্জ্যসহ নতুন নতুন আবর্জনা। এতে করে মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ এখন যেন একেকটি টিলায় রূপ নিচ্ছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার স্বীকার হতে পারে।
এ অবস্থার কারণে আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রী, পথচারী এবং পরিবহন শ্রমিকদের ভোগান্তির শেষ নেই। পথচারি নাজমা বেগম বলেন, নাক-মুখ বন্ধ করেও গন্ধ সহ্য করা যায় না। এত দুর্গন্ধ ছড়ায় যে গাড়িতে বসেও থাকা যায় না।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ময়লা ফেলে ইতোমধ্যে মহাসড়কের এক লেন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী, যাত্রী ও চালকরা। আশপাশে বসবাসকারী মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ মিয়া বলেন, আপনারা কয়েক দিন আমাদের এলাকায় থাকলে বুঝতে পারবেন কীভাবে আমরা বেঁচে আছি! আমাদের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। হেঁটে চলাচল করলে দুর্গন্ধে বমি আসে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা খুবই কষ্টে আছেন। দুর্গন্ধে পেটে খাবার ঢুকতে চায় না। এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে এলাকা ছাড়তে হবে। এ ছাড়া কোনো বিকল্প দেখছি না।
যাতায়াত পরিবহনের চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ময়লায় লেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আস্তে আস্তে এই রাস্তা টা যেতে হয় আস্তে গেলে দুর্গন্ধে যাত্রীদের অনেক সমস্যা হয়। এটা বহুদিনের সমস্যা। কয়েকটি পয়েন্টে এমন বড় বড় ভাগাড় হয়েছে।
বাসে থাকা যাত্রী মো. সজিব মিয়া জানান, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। অথচ দিনের পর দিন ময়লার স্তুপ বাড়ছে, কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, (বাপা) কিশোরগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, খোলা স্থানে এভাবে ময়লা ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যেও মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। আশপাশের বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠছে, যার প্রভাব পড়তে পারে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যে।
এলাকাবাসীর দাবি, এ সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান না হলে মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তারা দ্রুত ময়লা অপসারণ এবং বিকল্প ডাম্পিং স্পট নির্ধারণে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া বলেন, জনভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
কেকে/ এমএস