গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) জলবায়ু সহনশীল সয়াবিনের জাত উন্নয়ন ও জাতের বিশুদ্ধতা রক্ষাবিষয়ক গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনার লক্ষ্যে রিভিউ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ছিল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘স্মার্ট কৃষি’ উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১১টায় কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষেসলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া-এর আর্থিক সহায়তা এবং কৃষিতত্ত্ব বিভাগের কারিগরি সহযোগিতায় আয়োজিত এ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় কৃষিতত্ত্ব বিভাগে গত বছর পরিচালিত সয়াবিনভিত্তিক ৮টি গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। পাশাপাশি আগামী বছর সয়াবিন বিষয়ক গবেষণার সম্ভাব্য ক্ষেত্র ও বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। মূলত গবেষণার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিকনির্দেশনা প্রদানই ছিল এ কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য।
প্রফেসর ড. এম. আব্দুল করিম সভাপতিত্বে কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন প্রফেসর এম. এ. মান্নান।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
এছাড়াও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়াবিন গবেষক ফুজি, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
কর্মশালায় বিশেষভাবে লবণ ও খরা সহিষ্ণু সয়াবিন জাত উদ্ভাবন এবং আধুনিক ন্যানো প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের লবণাক্ত ও খরা প্রবণ অঞ্চলে সয়াবিন চাষের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। ফলাফল উপস্থাপনের পর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।
সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতায় কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের প্রয়োজন এমন ফসল, যা পরিবেশগত চাপ মোকাবেলা করে ভালো ফলন দিতে পারে। সয়াবিন শুধু খাদ্য ও তেলের উৎস নয়, এটি পশুখাদ্য ও পুষ্টি উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খরা, লবণাক্ততা এবং তাপমাত্রা পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জে যেসব গবেষক এই ফসলকে অভিযোজিত করতে নিরলস কাজ করছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাত উন্নয়নের পাশাপাশি তার বিশুদ্ধতা রক্ষা এবং মাঠ পর্যায়ে মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, এই কর্মশালার মাধ্যমে আমাদের গবেষণা আরো কার্যকর, সময়োপযোগী ও মাঠকেন্দ্রিক হবে।’
উল্লেখ্য, গাকৃবির কৃষিতত্ত্ব বিভাগ এ পর্যন্ত ৫টি জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নত বিশেষ সয়াবিন জাত উদ্ভাবন করেছে এবং ভবিষ্যতে আরো নতুন জাত উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
কেকে/ এমএস