মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চালকের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার এক কলেজছাত্রী (১৮) নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ১০টায় উপজেলার চাঁনপুর এলাকার এম মুহিত ব্রিকস ফিল্ডের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় চালকের আসনে ছিলেন কুলাউড়ার বাসিন্দা প্রজেশ দাশ। সে কুলাউড়া উপজেলার মৃত দিরেন্দ্র দাশের ছেলে।
জানা গেছে, ছাত্রীটি পরীক্ষায় অংশ নিতে রওনা দিলে পথে চালক তাকে ‘মা’ সম্বোধন করে পাশে বসতে বলেন, কিন্তু চলন্ত অবস্থায় শুরু হয় ইচ্ছাকৃত স্পর্শ এবং নিপীড়ন। এ অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে ছাত্রীটি চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেন এবং মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন। পথচারীরা তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং চালককে হাতেনাতে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চালকের অশ্লীল আচরণের বিষয়টি উঠে আসে, তিনি গিয়ার বদলানোর অজুহাতে ছাত্রীর শরীরে ইচ্ছাকৃতভাবে কুনুই স্পর্শ করতেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড়লেখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক প্রজেশ দাশকে গ্রেফতার করে এবং অটোরিকশাটিও জব্দ করে। ছাত্রীর মামা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে চালককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং অনেকেই দাবি করছেন, এমন অপরাধের দ্রুত বিচার হওয়া উচিত। সমাজে নারীর চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে শিক্ষা ও উন্নয়নের গতি ব্যাহত হবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থার দাবি জানান।
এদিকে আহত ছাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে মানসিক আঘাত এখনও রয়ে গেছে, বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। পুরো ঘটনাটি প্রমাণ করে চলন্ত পথে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কতটা জরুরি। এ ধরনের অপরাধ যেন আর না ঘটে, সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কেকে/ এমএস