মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা রাড়িখালি গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কমিরুল মোল্যা (৩০) নামের এক যুবককে জীবিত কবর দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় রোববার (২২ জুন) মহম্মদপুর থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর ভাই জমিরুল মোল্যা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে রাড়ীখালী উত্তরপাড়া এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে কমিরুলকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের হত্যাচেষ্টা করা হয়। পরে মৃত ভেবে তাঁর শরীরের অধিকাংশ মাটিচাপা দেওয়া হয়। তার পায়ের একটি অংশ বেরিয়ে থাকতে দেখে শিশুরা এলাকাবাসীকে খবর দেয়। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে মাটি খুঁড়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
পেশায় দিনমজুর কমিরুল পার্শ্ববর্তী নারায়ণপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক মোল্যার ছেলে। বর্তমানে তিনি মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কমিরুল মোল্যা আজ গণমাধ্যমকে বলেন, ওইদিন (১৯ জুন) দুপুরে বাড়ি থেকে তিনি রাড়ীখালী বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। রাড়ীখালী উত্তরপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ওই গ্রামের আবদুল্লাহ নামের এক যুবক তাকে ঝাড় থেকে কাটা বাঁশ বের করে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাকে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করেন। এরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
কমিরুলের দাবি, গত ৫ আগস্টের পর ওই ছেলের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়। আমার ধারণা, এ কারণেই আমাকে খুন করতে চেয়েছিল।
কমিরুল মোল্যার মা ফরিদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে গলায় গামছা পেঁছিয়ে মেরে মাটিচাপা দিয়ে কয়জনে মিলে পাড়াচ্ছিল। একটা ছেলে টের পেয়ে তার বাবাকে বললে স্থানীয়রা তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। মরে গেছে মনে করে ওরা আমার ছেলেকে জীবন্ত মাটিচাপা দিচ্ছিল। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আবদুল্লাহসহ আরো পাঁচজনকে সঙ্গে নিয়ে কমিরুলের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করেন। এরপর তাকে মৃত ভেবে শরীরে অধিকাংশ মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যান। কেবল তার পায়ের অংশ মাটির ওপরে ছিল। প্রতিবেশী ইব্রাহিম শেখ নামে এক শিশু বিষয়টি দেখে তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়। শিশুটির পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, কামরুলের এখনো গলায় ব্যথা আছে এবং শ্বাস রোধ করার কারণে তার চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। এ কারণে তাকে চক্ষুবিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা নেই।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান জানান, ওই যুবকের ভাই ছয়জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
কেকে/এএম