সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রাইয়ান কবিরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন ব্যাংকের একজন গ্রাহক। গত সোমবার দুদকে আবেদনটি করেন ব্যাংকটির গ্রাহক শিমুল সর্দার। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রাইয়ান কবির একজন দুর্নীতিবাজ ও প্রতারক। নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালক হওয়ায় সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ২০২২ সালের ৩১ মে তাকে পর্ষদ থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে কবিরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনেক অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে পর্ষদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৫ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। কোনো উদ্যোক্তা না হয়েও ২০০২ সালে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হন রাইয়ান কবিরের বাবা আলমগীর কবির। ২০০৪ সালে তিনি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিয়ে ২০ বছর ছিলেন। ছেলে রাইয়ান কবির ২০০৩ সালে ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগে চাকরিতে নিযুক্ত হন। তাকে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে পরিচালক বানিয়েছেন আলমগীর কবির। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, জালিয়াতি, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের মতো ঘটনা হাজারো গ্রাহকের আমানতকে শঙ্কায় ফেলেছে।
বিধিবহির্ভূতভাবে ২০ বছর চেয়ারম্যানের পদে থেকে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে লুটপাট করেছেন আলমগীর। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঋণ কেলেঙ্কারি, শেয়ার কারসাজিসহ বিপুল পরিমাণ অর্থপাচারের মাধ্যমে ব্যাংকটির হাজারো গ্রাহকের আমানতকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। অনৈতিকভাবে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
তার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের বোর্ড সভায় পাস করিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সভায় কমসংখ্যক এজেন্ডা আলোচনা করা হলেও পরিচালকদের উপস্থিত দেখিয়ে সবগুলো এজেন্ডা পাস দেখান। আবার এজেন্ডার শেষ দিকে বিবিধ নামে একটা এজেন্ডা থাকে। যেখানে নিজের ইচ্ছামতো সব এজেন্ডা ঢুকিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে পাস হওয়া মেমোতে নিজের পছন্দমতো পাতা পরিবর্তন করে নিতেন।
তাতে মেমোর শর্ত, ঋণের পরিমান ও মেয়াদ পরিবর্তন করে দিতেন। এসব চলছে আলমগীর কবির ও তার ছেলের নির্দেশে। এ ছাড়া আবেদনে আরো ব্যাপক অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। আবেদনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়।
কেকে/এএস