চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আওয়ামী দোসরমুক্ত হলেও পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারীরা আবারও দখল নিয়েছে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব। স্থানীয় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের সহায়তায় প্রেসক্লাবটি দখল করে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আওয়ামী দোসররা।
যার ফলে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধের সাংবাদিক ও রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে রীতিমতো তথ্যসন্ত্রাস চালাচ্ছে তারা। এমনকি সম্প্রতি ডানপন্থি সাংবাদিকদের ঘায়েল করতে চট্টগ্রাম আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে ফ্যাসিবাদের এ দোসররা। ছাত্র জনতার বিজয়ের পর ডানপন্থি সাংবাদিকরা সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে প্রবেশ করলে আওয়ামী দোসররা প্রেসক্লাব ছেড়ে চলে যায়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিবাদ মুক্ত সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। দৈনিক আমার দেশ সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম আহ্বায়ক, দৈনিক সংগ্রাম প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি যুগ্ম আহ্বায়ক ও দৈনিক ইনকিলাব প্রতিনিধি সোলায়মান মেহেদীকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী পরিষদ ঘোষণা করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আ ফ ম বোরহান। আওয়ামী দোসর মুক্ত এ আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবে চট্টগ্রামের প্রথম শহিদ ওয়াসিম আকরামের নামে একটি হলের নামকরণ করা হয়। দেশের প্রথম শহিদ আবু সাঈদের নামে নির্মাণ করা হয় শহিদ আবু সাঈদ গেইট। শহিদ মীর মুগ্ধের নামে বিশুদ্ধ পানির প্লান্ট স্থাপন করা হয়।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব ও দৈনিক আমার দেশের চট্টগ্রাম আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি শহিদ ওয়াসিম আকরাম হলের উদ্বোধন করেন। রমজানে প্রেসক্লাবের আঙিনায় গণইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রেসক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। হতদরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণসহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকেও সহায়তা প্রদান করা হয়।
এছাড়া বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা নিয়মিত প্রেসক্লাব পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু জুলাইয়ের শহিদ ও বিপ্লবীদের নিয়ে এমন কর্মযজ্ঞ সহ্য হয়নি ফ্যাসিবাদের দোসরদের।
ফোরকান আবু, কাইয়ুম, সেকান্দর ও লিটনসহ আওয়ামী দোসরদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে গত ৩ মে ভোর রাতে প্রেসক্লাব আবারও দখলে নেয়। এ সময় ভেঙে ফেলা হয় শহিদ আবু সাঈদ গেটের নাম ফলকসহ জুলাই বিপ্লবের সকল স্মৃতিচিহ্ন।
আওয়ামী দোসর ফোরকান আবু বাদী হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় আওয়ামী দোসরমুক্ত প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ও আমার দেশ প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ও দৈনিক সংগ্রাম প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি, সদস্য ও দিনকাল প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, সিনিয়র সদস্য ও খোলা কাগজ প্রতিনিধি হাকিম মোল্লাসহ ২০ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।
দিন-দুপুরে মহাসড়কের ওপর হামলা করা হয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইলিয়াস ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী সন্তানের ওপর। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা সাংবাদিকদের নিয়ে নানা তথ্যসন্ত্রাস চালিয়ে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করে চলছে । ইতিমধ্যে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের ১৫ সদস্যকে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে বহিস্কার করাও হয়েছে।
আমি ডামি নির্বাচনের এমপি সন্ত্রাসী মামুনের সেকেন্ড কমান্ড সাংবাদিক নামধারী উপজেলার ঠিকাদার সেকান্দর টাকার বিনিময় প্রেসক্লাব দখল বানিজ্যে জড়িত বলে আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দরা জানান।
এদিকে প্রেসক্লাব দখলের বিষয়টি লিখিতভাবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব পুলিশ সুপার, সীতাকুণ্ডে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীকে লিখিতভাবে জানিয়েছে আহ্বায়ক কমিটি।
কেকে/এআর