রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম সংগঠনদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিছিলে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ চত্বরের আমতলায় বামপন্থিদের মশাল মিছিল এবং শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রগণমঞ্চের সভাপতি নাসিম সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সংগঠক তারেক আশরাফ, ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ কাইসার আহমেদ, ছাত্র ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক আহমেদ ইমতিয়াজ সৈকত।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাসের প্রতিবাদে মশাল মিছিলের ডাক দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ মিছিল হওয়ার কথা ছিল। তবে তা ওইসময় হয়নি। এ খবর পেয়ে শাহবাগ বিরোধী ঐক্যর ব্যানারে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহন মার্কেটের আমতলায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। অন্যদিকে রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা মশাল জ্বালিয়ে অন্যদিনের তুলনায় উচুস্বরে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে সমাবেশে উপস্থিত শিবিরের নেতা-কর্মীরা তাদের দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি করেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, আমাদের মশাল মিছিলে প্রায় সকলেই আহত হয়েছে। তবে ৪ জন নেতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। চব্বিশ পরবর্তী সময়ে এ হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আজকে আদালতের একটি রায় এসেছে। কিন্তু যারা এ রায় মেনে নেয়নি, তাদের আমারা সবাই চিনি। তারা ২০১৩ সালেও আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে শাহবাগতন্ত্র কায়েম করে ফ্যাসিবাদের বীজ রোপন করেছিল। চব্বিশে এসে ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে আমাদের তা সমাধান করতে হয়েছে। শাহাবাগীরা সব সময় হাসিনা আর ভারতের ম্যান্ডেট সার্ভ করেছে। আজ আমরা বুদ্ধিজীবী চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে পরিবহন চত্বরে একত্রিত হয়েছি। আমরা শাহবাগ বিরোধী স্লোগান দিয়েছিলাম তখন তারা আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর ঢিল-নিক্ষেপ করে উত্তেজিত করে দিয়েছে।
হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোজাহিদ ফয়সাল বলেন, এটা আদত ছাত্রশিবিরের কোনো প্রোগ্রাম নয়। এটা শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের প্রোগ্রাম ছিল। এটি যেহেতু ঐক্য, সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেছে। হাসিনাকে ফ্যাসিবাদী ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করার জন্য ২০১৩ সালে তাদের যে ভূমিকা, এটির বিরুদ্ধেই আজকের কর্মসূচি ছিল।
কেকে/ এমএস