বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
পরে তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভবনের বাইরে বের করে দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন ঘোষণা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী এবং ট্রেজারার ড. মো. মামুন অর রশিদ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে নানা দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু উপাচার্য কোনো কিছুর প্রতি কর্ণপাত করেননি। তিনি স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করছেন। আমাদের একদফা বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এস. এম. ওয়াহিদুর রহমান জানান,‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর সম্মতিতে আমরা প্রশাসনিক শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাঁচটি বিভাগ ভিসির পদত্যাগের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে, তবে আমরা আশা করি অন্য বিভাগগুলোও বিবৃতি দেবে। একাডেমিক কার্যক্রমও আমরা বন্ধ করে দেবো এবং শেষপর্যন্ত প্রয়োজনে আমরণ অনশনেও যাবো।’
এদিকে, এ আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম হলেও, সামান্য সংখ্যক নারী শিক্ষার্থী আজ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। এক আন্দোলনকারী নারী শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা একদফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে আছি, প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো যদি উপাচার্য পদত্যাগ না করেন।’
প্রসঙ্গত, শুরুতে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। পরে আন্দোলনরত ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরই মাঝে, ক্যান্সারে আক্রান্ত এক শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য পাঁচ মাসে তিনবার আবেদন করেও কোনো সাড়া পাননি। পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হলে আন্দোলন আরো বিস্তৃত রূপ নেয় এবং শিক্ষার্থীরা একদফা দাবিতে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
কেকে/ এমএস