মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় থানায় অভিযোগ করেন স্বজনেরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী মো. আল-আমিনের (৪২) ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত আজগর আলী (৬০) রায়দক্ষিণ গ্রামের প্রয়াত আবদুর রশিদ খানের ছেলে। তিনি এলাকায় একটি চায়ের দোকান করতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই এলাকার প্রয়াত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
নিহতের স্বজন ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত আজগর আলীর নাতনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যাবার পর থেকেই নানার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করে। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে আসছেন স্থানীয় বখাটে আল-আমিন। এ নিয়ে মেয়েটির স্বজনেরা বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি।
পরে গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হন আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যান।
এ সময় দোকান থেকে টেনে বাইরে এনে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আজগর আলীকে গুরুতর আহত করে। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসক তাকে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বজনেরা তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় আবুল কালামসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, অভিযুক্ত আল-আমিন এলাকায় মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নাতনিকে উত্ত্যক্ত ও অশ্লীল দৃষ্টিভঙ্গি করায় আজগর আলী থানায় মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা কুপিয়ে তাকে হত্যা করেন।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক বলেন, উত্ত্যক্তের ও হত্যার ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কেকে/এএস