বহুল আলোচিত মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় আসামিদের সশরীর উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) মাগুরার আদালতে প্রথম দিনে মামলার বাদীসহ সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
এ উপলক্ষ্যে সকালে আসামি হিটু শেখসহ তার পরিবারের অন্য তিনজন আসামিকে আদালতে আনা হয়। সকাল ১০টার পরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে আনা হয়।
সেখানে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ আইনজীবীরা। আসামিদের পক্ষে জেলা লিগ্যাল এইড কর্তৃক মনোনীত আইনজীবীরা সাক্ষীদের জেরা করেন। এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রতি কর্ম দিবসেই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘আজ তিনজন সাক্ষীদের মধ্যে মামলার বাদী আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার সাক্ষ্য দেন, পরবর্তীতে প্রতিবেশী জুলি ও শিশু আছিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভ্যানচালক রুবেলও তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এই মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে আদালত এবং প্রত্যেক কার্যদিবসেও সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন রাত ১০টার দিকে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে মামলার ৪ আসামিকেই অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও নিহত শিশুর বোন জামাই সজিব শেখ ও তার (সজিব) ভাই রাতুল শেখকে খুন জখমের ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগমকে তথ্য গোপনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
গত ১ মার্চ শনিবার মাগুরা সদরের একটি গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় ভুক্তভোগী ওই শিশু। ৫ মার্চ বুধবার রাতে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ ওই শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যাচেষ্টা করে। ৬ মার্চ সকালে তাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে তার চিকিৎসা চলে। সর্বশেষ ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবারে মারা যায় আট বছরের শিশু আছিয়া।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে ৮ মার্চ ৪ জনের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ও আলোচনার সৃষ্টি হয়।
কেকে/এএস