মাদারীপুরের রাজৈরে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাজৈর প্রশাসন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) রাতে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনলেও আজ সোমবার সকালে পরিস্থিতি অস্থির হয়ে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে উপজেলা প্রশাসক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপজেলার কয়েকটি এলাকায় ১৪৪ জারি করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকালে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ৪ ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই দুই পক্ষ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকে। এমনকি এই উত্তেজনা উপজেলার কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন থাকলেও যেভাবে দুই পক্ষ বিভিন্ন এলাকায় মারমুখী হয়ে আছে তাতে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজৈর উপজেলা প্রশাসন এক অফিস আদেশে রাজৈর বাজার, পশ্চিম রাজৈর, বদরপাশা ও গোপালগঞ্জ গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
যে সব এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে সে এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তির চলফেরা, সভা সমাবেশ, শোভাযাত্রা, মাইকের ব্যবহার, লাঠিসোটা বা যেকোনো আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষাণা করার কথা অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। এ আদেশ আজ দুপুর ১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ানের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদ খান বলেন, সকাল থেকে একাধিকবার দুই পক্ষই বিভিন্ন স্থানে আবার সংঘবন্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা তাদের সংঘবন্ধ হতে দিইনি। সেসব স্থানে সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সে স্থানগুলো পুলিশের কড়া নজরদারিতে আছে। পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক আছে।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরের রাজৈরে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষ অন্তত ৪০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে পুরো এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। এ ঘটনার জেরে আজ সোমবার ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
কেকে/ এএস