বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫,
৬ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: গাজা সিটি দখলে অভিযান শুরু ইসরায়েলের, নিহত ৮১      গ্যাস সংকটে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-রফতানি      মনোনয়নপত্র জমাদানে উৎসবমুখর পরিবেশ      ভারতে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান, অভিযোগ অস্বীকার নয়াদিল্লির      দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা      জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ       গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব      
খোলাকাগজ স্পেশাল
মার্কিন শুল্ক
বাণিজ্যে নবউত্থানের সম্ভাবনা
সাজেদ রোমেল
প্রকাশ: বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:০৮ এএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

রফতানির বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে, তার আগে আছে চীন। রফতানির বাজারের ৩২ দশমিক ২ শতাংশ চীনের হাতে, বাংলাদেশের হাতে ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। পরেই ভিয়েতনামের অবস্থান, তাদের হাতে বৈশ্বিক বাজারের ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

এখানে ভিয়েতনামের ক্রয়াদেশ পেয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। আর চীনের ওপর শুল্ক কম হলেও তাদের শ্রমের মূল্য ও উৎপাদন খরচ বেশি থাকায় সেখানেও বাংলাদেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবে। কম্বোডিয়ার ওপর ৪৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪৫ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ দেশগুলোর ক্রয়াদেশও চলে আসতে পারে বাংলাদেশে। ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এ দুটি দেশের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়বে বাংলাদেশ। 

সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া 

সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি হয়তো পড়তে চলেছে ভিয়েতনামের ওপর। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ শতাংশ ‘পারস্পরিক’ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে দেখানো হচ্ছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের ১২৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকবে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক ভিয়েতনামের রফতানিনির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামোর একেবারে গোড়ায় আঘাত করবে। গত এক দশকে (মহামারি বাদে) দেশটির অর্থনীতি গড়ে সাত শতাংশ হারে বেড়েছে, এর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে চীন থেকে উৎপাদন স্থানান্তর। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি ভিয়েতনামের মোট রফতানির ৩০ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ২৭ শতাংশ।

চীনে প্রকৃত মজুরি বাড়ায় বহু প্রতিষ্ঠান অপেক্ষাকৃত সস্তা শ্রম এবং দক্ষ জনশক্তির কারণে ভিয়েতনামকে বেছে নেয়। অনেকে ‘চায়না-প্লাস-ওয়ান’ কৌশলের অংশ হিসেবে সরবরাহ চেইনের একটি অংশ ভিয়েতনামে গড়ে তোলে। স্যামসাং ও নাইকির মতো কোম্পানিগুলো বড় বিনিয়োগ করেছে সেখানে। বিশেষ করে পাদুকা, খেলনা ও ক্রীড়া সামগ্রীর শিল্প সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ভিয়েতনামে উৎপাদিত এই পণ্যের যথাক্রমে ৩৭ ও ৫২ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতিতে কম্বোডিয়ার ওপর ৪৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগে পড়েছেন কম্বোডিয়ার পোশাক শ্রমিকরা। তাদের আশঙ্কা, এই শুল্ক বহাল থাকলে সংক্ষিপ্ত চুক্তিতে নিয়োগ, চাকরি হারানো কিংবা দেশ ছেড়ে বিদেশে কাজ খোঁজার মতো কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে।

কম্বোডিয়ার মোট রফতানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে এবং এর বড় অংশ হলো তৈরি পোশাক, জুতা ও ভ্রমণসামগ্রী। এ খাতে কাজ করেন প্রায় ৯ লাখ শ্রমিক। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো সাধারণত ছয় থেকে ১২ মাস আগেই অর্ডার দিয়ে রাখে, তাই তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে না। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে উৎপাদন অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হলে ভয়াবহ ধাক্কা খাবে কম্বোডিয়ার গার্মেন্টস কারখানা ও শ্রমিকেরা।

কম্বোডিয়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন (৯৯০ কোটি) মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যা দেশটির মোট রফতানির ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে মাত্র ২৬৪ মিলিয়ন (২৬ কোটি ৪০ লাখ) ডলারের পণ্য। এই অসম বাণিজ্য সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির কারণে তুলনামূলকভাবে কম্বোডিয়ার ওপর প্রভাব অনেক বেশি পড়বে।

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের ক্রয়াদেশ পেতে পারে বাংলাদেশ 

মিয়ানমার থেকে রফতানি হয় ৮ হাজার কোটি ডলারের পণ্য, এটি বৈশ্বিক বাজারের এক শতাংশের নিচে, .৮৫ শতাংশ। দেশটিতে ৪৫% শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপ করায় ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে চলে আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। একইভাবে থাইল্যান্ড ৭৭৬০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করে যা বৈশ্বিক বাজারের .৮২ শতাংশ। দেশটিতে বাংলাদেশের সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করায়, ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় তেমন কিছু হেরফের হবে বলে মনে হয়। তবে সেখানে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, তার সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ। 

 বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নবউত্থানের সম্ভাবনা

বিজিএমইএ সংগঠনটির সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বড় লাভের আশা দেখছেন। তিনি সম্প্রতি একটি পত্রিকায় মতামত কলামে লিখেছেন, বাংলাদেশ যদি যথাযথ কৌশল দ্রুত নির্ধারণ করতে পারে তবে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বল্প ও মধ্য মানের পোশাক রফতানি হয়, যা বেশিরভাগটা সরবরাহ করে বাংলাদেশ। ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশ কম দামে ভালো মানের পোশাক রফতানি করতে পারবে। ক্রেতারা শুল্কের বোঝা বাংলাদেশের সরবরাহকারীদের ঘাড়ে দিতে পারে। তাই পরিস্থিতি খুব শান্তভাবে হিসাব-নিকাশ করে সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিতে হবে।

বাংলাদেশের পোশাক থেকে নানা শিল্পের নতুন উত্থানের খুবই ভালো সুযোগ চলে এসেছে। এটা কাজে লাগাতে পারলেও আগামী বছর মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের সবটুকু সুবিধাও পাবে বাংলাদেশ। 

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চাটখিলে বৃক্ষ রোপণ
গুরুদাসপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
চার বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির আভাস, পাহাড়ধসের শঙ্কা
মুন্সীগঞ্জে ধাক্কায় ট্রলার ডুবে মাঝি নিখোঁজ, বাল্কহেডসহ আটক ৪
চীন গেলেন সেনাপ্রধান

সর্বাধিক পঠিত

স্যুটার মান্নান হত্যা মামলার আসামি জুয়েল আটক
গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব
নীলসাগর গ্রুপের ‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক
নওগাঁয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালন
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close